বিয়ে মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সুস্থ সুন্দর ও সুশৃঙ্খল পারিবাকি জীবনের গোড়াপত্তনে বিয়েকে আবশ্যক করেছে ইসলাম। এ কারণে বিয়ে সম্পর্কে ইসলামে রয়েছে অনেক বিধিবিধান। আল্লাহর দেয়া বিধানেই নারী-পুরুষ একে অপরের জন্য বৈধ হয় এবং আল্লাহর দেয়া বিধানেই একে অপরের জন্য হারাম হয়।
আল্লাহর দেয়া বিধানের আলোকেই মুসলিমরা এ বন্ধন স্থাপন করে। কুরআন-সুন্নাহর বিধিবিধানের আলোকেই এ সম্পর্ক বৈধতা লাভ করে। কুরআনুল কারিমে এ সম্পর্কে রয়েছে সুস্পষ্ট ঘোষণা। আবার ভিন্ন ধর্মের লোকদের বিয়ের নীতিমালাও বর্ণিত আছে কুরআনে।
যারা শিরক ও কুফরির সঙ্গে জড়িত এমন নারী-পুরুষকে বিয়ে করা মুসলমানদের জন্য হারাম। আল্লাহ তাআলা কুরআনে ঘোষণা করেন-
‘তেমারা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। নিঃসন্দেহে একজন মুমিন দাসী যে কোনো মুশরিক নারীর চেয়ে অনেক উত্তম। যদিও এই মুশরিক নারীকে তোমাদের বেশি ভালো লাগে। আর তোমরা (তোমাদের নারীদের) মুশরিক পুরুষদের কাছে বিয়ে দিয়ো না। যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। নিঃসন্দেহে একজন মুমিন দাস যে কোনো মুশরিক পুরুষের চেয়ে অনেক উত্তম। যদিও সেই মুশরিক পুরুষকে তোমাদের বেশি ভালো লাগে। কারণ তারা (মুশরিকরা) সকলে তো জাহান্নামের দিকে ডাকে আর আল্লাহ তার বিধানের মাধ্যমে জান্নাত ও মাগফিরাতের দিকে আহবান করেন। তিনি তার আয়াতসমূহ মানুষের উপকারার্থে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা তা অনুসরণ করতে পারে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২১)
আল্লাহ তাআলা কুরআনের অন্য আয়াতে ঘোষণা করেন-
‘হে ঈমানদারগণ! যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিজরত করে চলে আসে, তখন তাদেরকে পরীক্ষা কর। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্পর্কে অবগত আছেন। যদি তোমরা জান যে, তারা ঈমানদার, তবে আর তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠিও না। এরা কাফেরদের জন্যে হালাল নয় এবং কাফেররা এদের জন্যে হালাল নয়। কাফেররা যা ব্যয় করেছে, তা তাদের দিয়ে দাও। তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিয়ে করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না। তোমরা যা ব্যয় করেছ, তা চেয়ে নাও এবং তারাও চেয়ে নিবে যা তারা ব্যয় করেছে। এটা আল্লাহর বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা মুমতাহিনা : আয়াত ১০)
কুরআনুল কারিমের উল্লেখিত দুইটি আয়াত থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, কোনো মুসলমান ঈমানদার নারী-পুরুষের জন্য অমুসলিম নারী-পুরুষকে বিয়ে করা বৈধ নয়। ইসলামের আলোকে তা হারাম। শুধু বিয়ে-শাদিতেই নয়, বরং কাফির মুশরিকদের সঙ্গে আন্তরিক সুসম্পর্ক ও ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। পাস্পরিক সামাজিক ও ব্যবসায়িক ও চাকরিতে সুসম্পর্কে কোনো দোষ নেই। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘যে জাতি আল্লাহ ও শেষ দিবসের উপর ঈমান রাখে তাদের আপনি কখনো দেখবেন না ওই সব লোকদের সাথে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে মোকাবেলারত। হোক তারা তাদের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বেরাদর কিংবা আত্মীয়-স্বজন, ওদের অন্তরে আল্লাহ ঈমানকে বদ্ধমূল করেছেন এবং তাদেরকে তার রূহ দ্বারা শক্তিশালী করেছেন।’ (সুরা মুজাদালা : আয়াত ২২)
তাই প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর কর্তব্য, বিয়ে-শাদি ও আত্মীয়তার সম্পর্ক সৃষ্টিসহ সব ক্ষেত্রেই আল্লাহর হুকুম মেনে চলা ঈমানের অপরিহায্য দাবি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ভিন্ন ধর্মের লোকদের বিয়ে করার ব্যাপারে কুরআনের নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।