নিশ্চয় ইসলাম আল্লাহর কাছে মনোনীত জীবন ব্যবস্থা। এ জীবন ব্যবস্থার সঙ্গে একমত, তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ের ওপর বিনা সন্দেহে বিশ্বাস থাকতে হবে। তবেই সে হবে ঈমানদার। আর তখনই তার জন্য ইসলাম হবে মনোনীত জীবন ব্যবস্থা।
যে বিষয়গুলোর প্রতি আল্লাহ তাআলা পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। সে বিষয়গুলো হলো-
>> আল্লাহর জাত ও সব সিফাতের ওপর বিনা শর্তে বিশ্বাস স্থাপন করা।
>> আল্লাহর ফেরেশতাদের ওপর বিশ্বাস পূর্ণ স্থাপন করা।
>> আসমানি কিতাবসমূহের ওপর বিশ্বাস পূর্ণ স্থাপন করা।
>> দুনিয়াতে আসা সব রাসুলদের ওপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা।
>> পরকালের (মৃত্যু পরবর্তী জীবনের) ওপর বিনা সন্দেহে পরিপূর্ণ বিশ্বাস রাখা।
>> আল্লাহ তাআলা কর্তৃক সুনির্ধারিত ভাগ্যের ভালো ও মন্দের ওপর বিশ্বাস রাখা।
উল্লেখিত বিষয়গুলোর মধ্যে প্রথম পাঁচটির ব্যাপারে পবিত্র কুরআনুল কারিমে রয়েছে সুস্পষ্ট ঘোষণা। আর উপরের বিষয়গুলোসহ শেষটির ব্যাপারে রয়েছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুস্পষ্ট ঘোষণা।
আল্লাহ তাআলা ঈমানদার বান্দার জন্য কুরআনুল কারিমে সুস্পষ্ট ভাষায় এ নির্দেশগুলোর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপনের কথা বলেছেন। যারা এগুলোর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবে তারাই মুমিন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘রাসুল বিশ্বাস স্থাপন করেছেন ওইসব বিষয়ের প্রতি যা তার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে (ওহি হিসেবে) অবতীর্ণ হয়েছে আর মুমিনরাও (তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছে)। সবাই বিশ্বাস করেছেন আল্লাহর ওপর, তার ফেরেশতাদের ওপর, তার (আসমানি) কিতাবসমূহের ওপর এবং তার (বার্তাবহক হিসেবে পাঠানো) রাসুলদের ওপর। তারা বলে, আমরা তার রাসুলদের একজনকে আরেকজন থেকে আলাদা করি না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৮৫)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা এ বিষয়গুলোর প্রতি ঈমান আনার কথা বলার পাশাপাশি যারা তা অস্বীকার করবে তাদের ব্যাপারে ঘোষণা করেন-
‘হে ঈমানদাররা! তোমরা আল্লাহ, তার রাসুল এবং তার রাসুলের ওপর অবতীর্ণ কিতাবসমূহের ওপর বিশ্বাস স্থাপন কর। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ, তার ফেরেশতা, তার কিতাব, তার রাসুল ও শেষ দিনকে (পরকাল) অস্বীকার করে, সে চরম পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত।’ (সুরা নিসা : আয়াত ১৩৬)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বিষয়গুলোর ব্যাপারেও দিয়েছেন সুস্পষ্ট ঘোষণা। তিনি বলেছেন-
‘ঈমান হলো তুমি আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার (আসমানি) কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসুলদের প্রতি এবং শেষ দিনের (পরকালের) প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। আর আরও বিশ্বাস স্থাপন করবে ভাগ্যের ভালো ও মন্দের প্রতি।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হাদিসের অন্য বর্ণনা এসেছে, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘ঈমান হলো তুমি আল্লাহ, তার সব ফেরেশতা, তার কিতাব, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত এবং তার রাসুলদের প্রতি (পূর্ণ) বিশ্বাস রাখা। আর পরকালে পুনরুত্থানের দিন (কেয়ামতের দিন) ও তকদিরের সবকিছুর (ভালো-মন্দ) প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা।’ (মুসলিম)
সুতরাং যারা নিজেদের ইসলামের অনুসারী হিসেবে দাবি করে কিংবা মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেয়, তাদের জন্য এ ৬টি বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন জরুরি। যতক্ষণ না তারা বিনা সন্দেহে ও শর্তে এ ৬টি বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারবে না ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমানদার বা মুমিন হতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈমানদার হতে এ বিষয়গুলোর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার সার্বিক স্বচ্ছলতা ও পরকালের চিরস্থায়ী সফলতা দান করুন। আমিন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।