প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১১
বর্তমান বিশ্বে দ্রুতগতিতে ইসলাম গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে। ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অসংখ্য মানুষ ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, গত এক বছরে শুধু ইউরোপেই প্রায় এক লাখের বেশি মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছেন। বিশেষ করে ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসে ইসলাম গ্রহণকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক বৈষম্য, মানসিক অশান্তি ও বস্তুবাদী জীবনের ক্লান্তি অনেককেই শান্তির ধর্ম ইসলামের দিকে ফিরিয়ে নিচ্ছে।
অন্যদিকে, আমেরিকায়ও ইসলাম গ্রহণকারীর হার বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ও নারী সমাজের মধ্যে কুরআনের শিক্ষা ও নবী করিম (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করছে। অনেকেই বলছেন, ইসলামের সরলতা, সহমর্মিতা ও মানবিক মূল্যবোধ তাদের নতুন জীবন খুঁজে পেতে সহায়তা করেছে।
আফ্রিকার দেশগুলোতেও ইসলাম ধর্মের প্রসার অব্যাহত রয়েছে। নাইজেরিয়া, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও উগান্ডার অনেক মানুষ স্থানীয় প্রথাগত ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করছেন। সেখানে ইসলামি শিক্ষা ও মসজিদভিত্তিক সমাজ সংস্কারের মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে।
গবেষকরা বলছেন, মিডিয়ার নেতিবাচক প্রচার সত্ত্বেও মানুষ যখন বাস্তবে মুসলমানদের জীবনের সৌন্দর্য ও কুরআনের মানবিক বার্তা জানতে পারছেন, তখন ইসলাম সম্পর্কে তাদের ধারণা সম্পূর্ণ বদলে যাচ্ছে। অনেকে বলেন, ইসলাম কোনো জাতিগত বা ভৌগোলিক ধর্ম নয়, বরং এটি সার্বজনীন মানবতার ধর্ম।
বিখ্যাত ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে সম্প্রতি মার্কিন সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী লিসা জনসন, জার্মান ফুটবলার এরিক মুলার এবং ফরাসি লেখক অঁতোয়ান রুশো ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তারা প্রত্যেকে বলেছেন, ইসলামের শিক্ষা তাদের জীবনে আত্মিক প্রশান্তি ও জীবনের লক্ষ্য স্পষ্ট করেছে।
এদিকে বাংলাদেশেও ইসলামি চেতনা ও ধর্মীয় চর্চা বাড়ছে। যুব সমাজ নামাজ, রোজা ও কুরআন পাঠে আগ্রহী হচ্ছে। ইসলামী বক্তৃতা, সামাজিক দাওয়াত ও অনলাইন মাধ্যমে ইসলাম প্রচারের নতুন ধারা গড়ে উঠেছে।
কুরআনের সূরা আন-নাসর-এ আল্লাহ বলেন, “যখন তুমি দেখবে মানুষ দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করছে, তখন তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা কর এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর।” আজকের এই বৈশ্বিক বাস্তবতায় সেই ভবিষ্যদ্বাণীর প্রতিফলন যেন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
ইসলাম শান্তি, সাম্য ও মানবতার ধর্ম। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ যদি ইসলামের এই মূল বার্তা অনুধাবন করতে পারে, তাহলে সমাজে অন্যায়, হিংসা ও বৈষম্যের অবসান ঘটবে— এমন আশাবাদই প্রকাশ করেছেন আলেম ও গবেষকরা।