প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৩
আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি ভালোবাসা ঈমানের মূল ভিত্তি। ইসলামে এই ভালোবাসা কেবল মুখের কথায় সীমাবদ্ধ নয় বরং অন্তরের গভীরতা থেকে তাঁর আদর্শ অনুসরণ করাকে অপরিহার্য করা হয়েছে। কুরআন ও হাদীসের অসংখ্য দিকনির্দেশনায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, নবীজীর প্রতি প্রকৃত মুহাব্বত ছাড়া পূর্ণ ঈমান অর্জন সম্ভব নয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর অনন্য গুণাবলী, অতুলনীয় সৌন্দর্য ও অফুরন্ত দয়া উম্মতের ভালোবাসা অর্জনের প্রধান কারণ। এ তিনটি বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ে তিনি সর্বোত্তম মানুষ হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে পরিপূর্ণ ভালোবাসার অধিকারী হয়েছেন। নবীর প্রতি যত বেশি ভালোবাসা থাকবে, তাঁর প্রতি আনুগত্যও তত বেশি হবে।
হাদীসে নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো মানুষ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না সে নবীজীকে নিজের প্রাণের চেয়েও অধিক ভালোবাসে। হযরত উমর (রা.) প্রথমে নিজের প্রাণকে অধিক প্রিয় মনে করলেও নবীর নির্দেশে তা সংশোধন করেন এবং বলেন, তিনি তাঁর প্রাণের চেয়েও নবীজীকে বেশি ভালোবাসেন।
কুরআনের সূরা তওবা (২৪) আয়াতে আল্লাহ সতর্ক করেছেন যে, যদি পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, ধন-সম্পদ বা গৃহ নবী ও আল্লাহর চেয়ে বেশি প্রিয় হয় তবে তা ঈমানের পরিপন্থী। এই আয়াত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে নবীর প্রতি মুহাব্বত ঈমানের মৌলিক শর্ত।
ভালোবাসা কেবল অন্তরে সীমাবদ্ধ নয়; এর প্রমাণ সুন্নাহর অনুসরণে প্রতিফলিত হতে হবে। মুখে প্রশংসা করলেও যদি তাঁর জীবনাচরণ গ্রহণ না করা হয় তবে তা অপূর্ণ মুহাব্বত। সুন্নাহ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা কঠিন হলেও এর সওয়াব অসীম, এমনকি শত শহীদের সওয়াবের সমান।
হযরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি নবীকে ভালোবাসবে সে কেয়ামতের দিন তাঁর সাথেই থাকবে। এটি ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম আনন্দদায়ক সুসংবাদ যা সাহাবিদের হৃদয়কে উজ্জীবিত করেছিল।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ নবীর অনুসরণে নিহিত। সূরা আলে-ইমরানের (৩১) আয়াতে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, যদি তাঁকে ভালোবাসতে চাও তবে নবীকে অনুসরণ কর, তবেই আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসবেন এবং গুনাহ মাফ করবেন।
সুতরাং রাসূলের প্রতি প্রকৃত মুহাব্বত হল তাঁর জীবনাদর্শ গ্রহণ, সুন্নাহ পালন এবং অন্তর ও কাজে ভালোবাসা প্রকাশ করা। ইসলামের সৌন্দর্য এখানেই যে, নবীর প্রতি আনুগত্যই আল্লাহর নৈকট্যের পথ।