প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ১০:১১
ইসলামে মানুষের দুনিয়াবি জীবনও অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) আমাদের এমন অনেক হাদিস দিয়ে গেছেন যেগুলো শুধু আখিরাতের জন্য নয়, দুনিয়ার জীবনের জন্যও হেদায়েত ও প্রশান্তির পথ দেখায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার পরিবার-পরিজনের কাছে উত্তম আচরণ করে।’ (তিরমিজি)। এই হাদিস আমাদের পারিবারিক জীবনে সদাচরণ, সহনশীলতা ও ভালোবাসার ভিত্তি তৈরি করে, যা সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার অন্যতম চাবিকাঠি।
অন্য একটি হাদিসে এসেছে, ‘সত্যবাদিতা মানুষকে নেক আমলের দিকে নিয়ে যায় এবং নেক আমল জান্নাতের পথে নিয়ে যায়।’ (বুখারি ও মুসলিম)। এটি আমাদের বলে দেয়, দুনিয়ায় সত্য পথে চলা মানেই সফলতা ও স্থিরতার জীবন। যারা প্রতিদিন সৎভাবে জীবনযাপন করেন, তাদের অন্তরে ভয় থাকে না, বরং আত্মবিশ্বাস জাগ্রত থাকে।
আরেকটি হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা পরস্পর হিংসা করো না, একে অপরকে পিঠ দেখিয়ে চলো না, বরং তোমরা আল্লাহর বান্দা হিসেবে ভাই ভাই হয়ে যাও।’ (মুসলিম)। আজকের পারস্পরিক বিরোধ, রাজনৈতিক শত্রুতা কিংবা সামাজিক হিংসার মূল প্রতিষেধক এই হাদিসের বার্তায় নিহিত।
দুনিয়ার প্রশান্তি পেতে হলে হাদিসের আলোয় পথ চলতে হবে। হিংসা, হানাহানি, মিথ্যাচার, চক্রান্ত—এসব ছেড়ে দিয়ে সত্য, সহনশীলতা, দানশীলতা ও ভালোবাসা অবলম্বন করতে হবে। রাসূল (সা.) নিজ জীবনে এসব গুণের মাধ্যমে দুনিয়ার মানুষদের হৃদয় জয় করেছিলেন। আজকের মুসলমানদের জন্যও সেগুলো পথের দিশা হয়ে থাকতে পারে।
দুনিয়ার শান্তি কেবল অর্থবিত্ত দিয়ে আসে না, আসে আত্মিক প্রশান্তি ও আল্লাহর সন্তুষ্টির মাধ্যমে। হাদিসগুলো এই বাস্তবতাকে তুলে ধরে, যাতে আমরা বুঝতে পারি—দুনিয়াবি সফলতার আসল পথ হচ্ছে নৈতিকতা ও আল্লাহভীতির মধ্য দিয়ে গড়ে তোলা জীবন।
আধুনিক সময়ের নানা চাপ, দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তার ভিড়ে এই হাদিসগুলো যেন প্রশান্তির বাতিঘর। যে ব্যক্তি হাদিসের আলোকে জীবন গড়তে সচেষ্ট হয়, সে দুনিয়াতে স্বস্তি ও আখিরাতে মুক্তির পথ পায়।
তাই, আমাদের উচিত প্রতিদিন একটি হাদিসের ওপর আমল করার চেষ্টা করা এবং তা নিজের জীবনে প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতির ভিত্তি গড়ে তোলা। দুনিয়ার জটিলতায় পথ হারিয়ে না গিয়ে, হাদিসের আলোয় জীবনের পথ সুস্পষ্ট করা আজকের সময়ের জরুরি প্রয়াস।