গত তিন সংসদের সদস্যদের দ্বৈত নাগরিকত্বের তথ্য খুঁজছে সরকার, পেলেই ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ২রা মার্চ ২০২৫ ১২:৫৬ অপরাহ্ন
গত তিন সংসদের সদস্যদের দ্বৈত নাগরিকত্বের তথ্য খুঁজছে সরকার, পেলেই ব্যবস্থা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের নির্বাচিত সদস্যদের বিদেশি নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিশেষভাবে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সদস্যদের মধ্যে যারা বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন, তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য ১৮৮টি দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।


স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এরই মধ্যে ২৪ জন সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্যের বিদেশি নাগরিকত্ব বা রেসিডেন্স কার্ড থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেন, তবে তিনি সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হতে পারবেন না। তবে তথ্য গোপন করে যদি এসব ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন বা মন্ত্রী পদ লাভ করেন, তা সংবিধান বিরোধী কাজ হবে।


পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৩ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে, যাতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশিদের পাসপোর্ট নবায়ন সংক্রান্ত তথ্য সংশ্লিষ্ট মিশন/দূতাবাস থেকে সংগ্রহ করা যাবে। চিঠিতে আরও বলা হয়, গত ৫ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত 'বিদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে মন্ত্রী-এমপি হন ২৪ জন' শিরোনামে সংবাদটির কপি যুক্ত করা হয়েছে।


এতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব গোপনে গ্রহণ করেছেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের বেলজিয়ামে রেসিডেন্স কার্ড রয়েছে, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল যুক্তরাজ্যের নাগরিক, এবং সাবেক দুই প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও জুনাইদ আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ 'গ্রিন কার্ড' ধারণ করছেন।


দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২৪ জনের মধ্যে পাঁচজনের নাগরিকত্ব রয়েছে যুক্তরাজ্যে। এদের মধ্যে আ হ ম মুস্তফা কামাল, মো. তাজুল ইসলাম, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং মো. মাহবুব আলী রয়েছেন। মাহবুব আলীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


বিশিষ্ট আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী, দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা ব্যক্তির সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হওয়া সংবিধানবিরোধী। তিনি বলেন, যদি এসব তথ্য গোপন করা হয়, তা আইন ও সংবিধান পরিপন্থী হবে।


স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করে যারা সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হয়েছেন, তাদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ এবং পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।