দেশের চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ঠাণ্ডার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। গত দুই দিন ধরে শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন।
তীব্র ঠাণ্ডায় শ্রীমঙ্গলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে চা-বাগান, গ্রামাঞ্চল ও শহরে নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা না মেলায় ঠাণ্ডা বাতাস পরিস্থিতি আরও শোচনীয় করে তুলেছে। দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ কাজের সন্ধানে বের হলেও আগের মতো আয়-রোজগার করতে পারছেন না। বিশেষ করে রিকশাচালক ও দিনমজুররা চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
গ্রামাঞ্চলে মানুষজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো দিনে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। সন্ধ্যার পর ঘন কুয়াশার কারণে অদূরের কোনো বস্তু বা যানবাহন দেখা যাচ্ছে না, ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে।
শীতজনিত রোগের প্রকোপও বাড়ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা ঠাণ্ডাজনিত শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া এবং ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগীর ভিড় ক্রমেই বাড়ছে।
শীত মোকাবিলায় বিভিন্ন সংগঠন ও প্রশাসনের উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেছে। শ্রীমঙ্গলে সরকারিভাবে নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার হতদরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৭শ কম্বল এবং নগদ ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে তা বিতরণ করা হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে শ্রীমঙ্গলে ১৩ হাজার পরিবারের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. মহসিন মিয়া মধু।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক মো. আনিসুর রহমান জানান, চলমান পরিস্থিতিতে শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। ফলে শীতের প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।