মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫৪ ভাদ্র, ১৪৩২
logo
ENকনভার্টার
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • বিনোদন
  • সম্পাদকীয়
  • খেলাধুলা
    • বিশ্বকাপ
    • ক্রিকেট
    • ফুটবল
    • অন্যান্য খেলাধুলা
  • বাংলাদেশ
  • বিবিধ খবর
  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • অন্যান্য
    • আইন-আদালত
    • সাহিত্য
    • প্রবাস জীবন
    • কৃষি
    • বাংলাদেশে করোনা
    • গনমাধ্যম
    • আবহাওয়া
    • জাতীয় সংসদ নির্বাচন
    • ভাইরাল টপিক
    • অর্থনীতি
    • ব্যবসা ও বাণিজ্য
    • বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
    • অপরাধ
    • স্বাস্থ্য
    • ধর্ম
    • বন্যা পরিস্থিতি
    • জনদুর্ভোগ
    • প্রতিবেশী
    • পর্যটন
    • মজার খবর
    • শিক্ষা
    • শেয়ার বাজার
    • চাকুরী
    • লাইফস্টাইল
অনুসন্ধান
logo
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • বিনোদন
  • সম্পাদকীয়
  • খেলাধুলা
  • বাংলাদেশ
  • বিবিধ খবর
  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • অন্যান্য
logo
  • হোম
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • বিনোদন
  • সম্পাদকীয়
  • খেলাধুলা
  • বাংলাদেশ
  • বিবিধ খবর
  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • অন্যান্য
  • অনুসন্ধান করুন
  • সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা
Logo

সম্পাদক : মোঃ শওকত হায়দার (জিকো)

প্রকাশক : ইনিউজ৭১ মিডিয়া লিমিটেড

হাউজ: নাম্বার ৫৫ , দ্বিতীয় তলা, রোড নাম্বার ৬/এ , সেক্টর - ১২ উত্তরা, ঢাকা - ১২৩০ ।

ফোন: +880 258 053 897, ইমেইল: [email protected] , [email protected]

গোপনীয়তার নীতি

ব্যবহারের শর্তাবলি

যোগাযোগ

আমাদের সম্পর্কে

আমরা

সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা

স্বত্ব © ইনিউজ৭১.কম

ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

ধর্ম

কোরবানির সংকিপ্ত ইতিহাস

Ziaul Hoque
জিয়াউল হক, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২১, ১৫:৩৯

শেয়ার করুনঃ
কোরবানির সংকিপ্ত ইতিহাস
ইতিহাসকোরবানি
https://enews71.com/storage/ads/01JR36BQSKCPE69WB8Z3TARXE3.jpg

সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা

https://enews71.com/storage/ads/01JR3CX28Y9BM01PRE4TXCNDWF.jpg

কোরবানি : সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ হচ্ছে, ‘নিশ্চয়ই (হে নবী!) আমি আপনাকে (নিয়ামত পূর্ণ) কাওসার দান করেছি, অতএব, আপনি আপনার ‘রব’ এর সন্তুষ্টির জন্যে সালাত কায়েম করুন ও তাঁর নামে কোরবানি করুন’ (সূরা আল কাওসার-১০৮/১-২)। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করবে না সে যেন ঈদগাহের নিকটে না আসে’ (আহমদ ও ইবনে মাজাহ)।

আরও

সত্যবাদিতার গুরুত্ব নিয়ে কোরআনের দিক নির্দেশনা

সত্যবাদিতার গুরুত্ব নিয়ে কোরআনের দিক নির্দেশনা

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, কোরবানির দিনে মানবসন্তানের কোনো নেক আমলই আল্লাহ তায়ালার নিকট তত প্রিয় নয়, যত প্রিয় কোরবানি করা। কোরবানির পশুর শিং, পশম ও খুর কিয়ামতের দিন (মানুষের নেক আমলনামায়) এনে দেয়া হবে। কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা আনন্দচিত্তে কোরবানি করো’ (তিরমিজি)।

কোরবানির অর্থ : আমাদের সমাজে বাংলায় প্রচলিত কোরবানি শব্দের অর্থ হচ্ছে, নিকটবর্তী হওয়া বা সান্নিধ্য লাভ করা। আল কুরআনে সূরা আল মায়েদার ২৭ নম্বর আয়াতে উল্লেখ আছে, ‘ইজ ক্কাররাবা-ক্কুরবা-নান’ অর্থাৎ যখন তার দু‘জনে কোরবানি পেশ করলো বা পশু জবাই করলো, বা জবাই করে ফেলে আসল। সূরা আল কাওসারে বলা হয়েছে,

আরও

সত্য, ন্যায় ও দানশীলতায় শান্তির পথ

সত্য, ন্যায় ও দানশীলতায় শান্তির পথ

‘ফাছল্লি লিরাববিকা ওয়ানহার’ অর্থাৎ অতএব, (হে নবী!) আপনার ‘রব’ এর স্মরণে সালাত আদায় করুন ও তাঁর সন্তুষ্টির জন্যে কোরবানি করুন’। এখানে ‘নাহার’ বলতে কোরবানি বোঝানো হয়েছে। আসলে ‘নাহার’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, নহর, বিশেষ নিয়মে জবাই বা জবাই করা, জবাই করে হত্যা করা বা প্রিয় বস্তু জবাই করে হত্যা করা বা ত্যাগ করা।

কোরবানির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস : দুনিয়ায় মানব বসতির শুরুতেই কোরবানির প্রচলন শুরু হয়েছে। পৃথিবীর প্রথম মানুষ আমাদের আদি পিতা ও নবী হজরত আদম (আ.) এর প্রথম সন্তান কাবিল ছিল আল্লাহ তায়ালা ও পিতা-মাতার অবাধ্য বা কাফের। কাবিলের ছোট ভাই হজরত আদম (আ.) এর দ্বিতীয় ছেলে হাবিল ছিল আল্লাহভীরু ও মু’মেন। সে সময় আল্লাহ তায়ালার হুকুমে জোড়া জোড়া সন্তান হতো।

একজন পুত্র ও একজন কন্যা সন্তান। আল্লাহ তায়ালার বিধান মতো প্রথম জোড়ার পুত্রের সাথে দ্বিতীয় জোড়ার কন্যার বিয়ে বৈধ ছিল। কাবিল আল্লাহ তায়ালার বিধান মানতে রাজি ছিল না। সে চেয়েছিল তার জোড়ার সুন্দরী বোনকেই বিয়ে করবে। শেষ পর্যন্ত তাদের দু’জনকে কোরবানি পেশ করার নির্দেশ দেয়া হলো।

আর বলা হলো যার কোরবানি কবুল করা হবে সে-ই প্রথম জোরার সুন্দরী বড় বোনকে বিয়ে করবে। এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা হচ্ছে,‘(হে নবী!) আপনি এদের কাছে আদমের দুই সন্তানের গল্পটি যথাযথভাবে শুনিয়ে দিন; গল্পটি ছিলো, যখন তারা দু‘জনে আল্লাহর নামে কোরবানি পেশ করলো, তখন তাদের মধ্যে একজনের (হাবিলের) কাছ থেকে কোরবানি কবুল করা হলো,

আর একজনের (কাবিলের) কোরবানি কিছুতেই কবুল করা হলো না, (যার কোরবানি কবুল করা হয়নি) সে বললো আমি অবশ্যই তোমাকে (যার কোরবানি কবুল করা হলো তাকে) হত্যা করবো, সে (যার কোরবানি কবুল করা হলো) বললো, আল্লাহ তায়ালা তো শুধু পরহেজগার লোকদের কাছ থেকেই কোরবানি কবুল করে থাকেন’(সূরা আল মায়েদা-৫-২৭)।

আল্লাহ তায়ালার আইন অমান্য করার কারণেই পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম হত্যাকাণ্ড ঘটায় পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান আল্লাহর দ্বীনের শত্র“, দুনিয়ায় শয়তানের প্রথম শিকার ‘কাবিল’। পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম আল্লাহর আইন, বিধান বা দ্বীন অমান্য করা আর মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটালো আল্লাহর দ্বীনের শত্র“ কাফের ‘কাবিল’। এটাই হচ্ছে নাস্তিক, কাফের ও শয়তানের কাজ, যা আল-কুরআনের সূরা আল মায়েদাসহ আরো কয়েকটি সূরায় উল্লেখ আছে। পৃথিবীতে কোরবানির ইতিহাস ও হত্যার ঘটনা এখান থেকেই শুরু হয়েছে।

আজকে মুসলিম সমাজে কোরবানির যে প্রচলন তা মূলত মুসলিম মিল্লাতের বা জাতির পিতা হজরত ইব্রাহীম (আ.) এর দেখানো পথ বা সুন্নাত। হজরত ইব্রাহীম (আ.) এর শতবর্ষ বয়সের পর আল্লাহ তায়ালা তাঁকে যে সন্তান দান করেছিলেন, তিনি আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে তাঁর সে কলিজার টুকরা হজরত ইসমাইল (আ.) এর কোরবানির সূত্র ধরে আজও কোরবানি প্রচলিত আছে।

হজরত ইব্রাহীম (আ.) এর কোরবানির সূত্রপাত : মুসলিম মিল্লাতের বা জাতির পিতা হজরত ইব্রাহীম (আ.) নমরুদ ও তার সাঙ্গো-পাঙ্গের অত্যাচারে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে তাঁর স্ত্রী হজরত সারাকে সাথে নিয়ে শাম দেশে হিজরত করলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে সেখানকার বাদশাহ ছিলো জালিম ও ভীষণ বদলোক। বাদশাহর লোকেরা হজরত ইব্রাহীম (আ.) ও তাঁর সুন্দরী স্ত্রী হজরত সারার আগমনের সংবাদ বাদশাহর দরবারে পৌঁছে দিলে বাদশাহ তাদেরকে ধরে নিয়ে আসতে বলে।

বাদশাহর লোকেরা হজরত ইব্রাহীম (আ.) ও তাঁর স্ত্রী সারাকে বাদশাহর দরবারে হাজির করে। বাদশাহ হজরত ইব্রাহীম (আ.) এর কাছে জানতে চায় তার সাথে স্ত্রী লোকটি কে? ইব্রাহীম (আ.) চিন্তা করলেন, স্ত্রী বললে হয়তো বা তাঁকে মেরে ফেলতে পারে, তাই তিনি বলেন, সে আমার দ্বীনি বোন। বাদশাহ হজরত ইব্রাহীম (আ.) কে বন্দী করে, আর হজরত সারাকে বাদশাহর বদস্বভাব চরিতার্থ করার জন্যে রেখে দেয়। বাদশাহর কু-প্রস্তাবে হজরত সারা রাজি নাহলে বাদশাহ তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়।

অতঃপর হজরত সারা দু’রাকা’আত সালাত আদায় করার অনুমতি চাইলে বাদশাহ তাঁকে সালাত আদায়ের ব্যবস্থা করতে দেয়। হজরত সারা সালাত শেষে আল্লাহ দরবারে ফরিয়াদ করেন যেন আল্লাহ তায়ালা তাঁর সতীত্ব রক্ষা করেন। এরই মধ্যে বাদশাহ অত্যন্ত অসুস্থ ও দুর্বল হয়ে পড়ে। অবস্থা খারাপ দেখে আর বাদশাহর মৃত্যুর জন্য তার লোকেরা হজরত সারাকে দায়ী করবে ভেবে হজরত সারা বাদশাহর সুস্থতার জন্য দোয়া করেন। একে একে তিন বার একই ঘটনা ঘটলে বাদশাহ হজরত সারার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। হজরত সারার সতীত্ব দেখে আর এক সতী নারী হজরত হাজেরাকে তাঁর দাসী হিসেবে দিয়ে তাঁদেরকে বিদায় করে দেয়।

হজরত সারা ও হজরত ইব্রাহীম (আ.) মুক্ত হয়ে সে দেশে বসবাস শুরু করেন। হজরত সারা তাঁর দাসী হজরত হাজেরাকে হজরত ইব্রাহীম (আ.) এর সাথে বিয়ে দেন। কারণ হজরত সারার বয়স তখন ৯০ বছর আর হজরত ইব্রাহীম (আ.) এর বয়স তখন ১০০ বছর। তাদের বিয়ের দীর্ঘ সময় পার হলেও তখনো হজরত সারা মা হতে পারেননি। তিনি ভাবলেন শেষ বয়সে যদি আল্লাহ তায়ালা মেহেরবানি করে তাঁর স্বামী হজরত ইব্রাহীম (আ.) কে কোনো সন্তান দান করেন। আল্লাহ তায়ালার মেহেরবানিতে এই হজরত হাজেরার গর্ভেই হজরত ইসমাইল (আ.)-এর জন্ম হয়।

হজরত ইসমাইল (আ.) এর জন্মের পর হজরত ইব্রাহীম (আ.) তাঁর স্ত্রী হজরত হাজেরা ও কলিজার টুকরা ছেলে ইসমাইলকে আল্লাহতায়ালা নির্দেশে কাবা ঘরের নিকটবর্তী সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের পাদদেশে নির্জন স্থানে সামান্য খেজুর ও এক মসক পানিসহ রেখে আসেন। হজরত ইব্রাহীম (আ.) যখন তাঁদের এ অবস্থায় রেখে স্থান ত্যাগ করছিলেন, তখন হজরত হাজেরা প্রশ্ন করছিলেন,

আপনি আমাদের এ নির্জন স্থানে রেখে চলে যাচ্ছেন ? হজরত ইব্রাহীম (আ.) ক্ষীণকন্ঠে জবাব দিয়েছিলেন, হ্যাঁ। আবারো হজরত হাজেরা প্রশ্ন করলেন এটা কি আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ ? হজরত ইব্রাহীম (আ.) আবারও জবাব দিয়েছিলেন, হ্যাঁ। হজরত হাজেরা আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা করে তাঁর শিশু সন্তানকে নিয়ে সেখানে অবস্থান করলেন।

https://enews71.com/storage/ads/01JQ184AJV9F0T856X9BBSG85X.gif

সে সময় কা’বা ঘরের তেমন কোনো চিহ্ন ছিলো না। কা’বা ঘরের ভিটিটি জমিন থেকে বেশ উঁচু ছিল। বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট বন্যায় চার পাশ ভেঙে গিয়েছিল। হজরত হাজেরা ও তাঁর সন্তানের খাদ্য ও পানীয় যখন শেষ হয়ে গেলো হাজেরা তখন খাদ্য ও পানির সন্ধানে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। যখন নিরাশ হয়ে ফিরছিলেন তখন একটি আওয়াজ শুনতে পান। হাজেরা বলেন, কে আছো আমি তোমার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি সম্ভব হলে তুমি আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে একটু সাহায্য করো।

হঠাৎ তিনি তাঁর শিশু পুত্র ইসমাইল (আ.) এর কাছে একজন লোক (ফেরেশতা) দেখতে পেলেন। সে (ফেরেশতা) তাঁর পায়ের গোড়ালি অথবা ডানা দ্বারা জমিনে আঘাত করলে অথবা হজরত ইসমাইল (আ.) এর কান্নাজনিত পায়ের গোড়ালির ঘর্ষণে নিচ থেকে পানির ফোয়ারা প্রবাহিত হতে লাগল। এ সেই ফোয়ারা বা কূপ যা বর্তমানে জমজম নামে বিশ্ব মুসলিমের কাছে পরিচিত। সুপেয় পানীয় হিসেবে পান করে পরিতৃপ্ত হন মুসলমানরা। তাও কা‘বাকে কেন্দ্র করে ও হজরত ইসমাইল (আ.) এর উছিলায় আল্লাহ তায়ালার করুণায় সৃষ্টি হয়েছে।

হাজেরা তাঁর মসক পূর্ণ করে নিলেন আর নিজেও তৃপ্তির সাথে পানি পান করলেন। এতে হজরত হাজেরার ক্ষুধা নিবারণ হল ও তাঁর শিশু পুত্রের জন্যে প্রয়োজনীয় দুধেরও ব্যবস্থা হলো। হজরত হাজেরার সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে ক্রমাগত ৭ বার দৌড়াদৌড়ি করার কারণে সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আল্লাহ সোবহানাহু ওয়া তায়ালা হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের জন্যে সাফা মারওয়া পাহাড়ে ৭ বার দৌড়াদৌড়ি করার বিধান জারি করেছেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অবশ্যই ‘সাফা ও মারওয়া’ পাহাড় দুটো আল্লাহ তায়ালার নিদর্শন সমূহের অন্যতম, অতএব, যদি তোমাদের মধ্যে কোনো লোক হজ বা ওমরা আদায় করার এরাদা করে তার জন্যে এই উভয় পাহাড়ের মাঝে তাওয়াফ করা বা দৌড়ানো দোষের কিছু নেই, কেননা যদি কোনো ব্যক্তি অন্তরে নিষ্ঠার সাথে কোনো ভালো কাজ করে তাহলে তারা যেন জেনে রাখে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা কৃতজ্ঞতাপরায়ণ ও প্রভূত জ্ঞানের অধিকারী”(সূরা বাকারা-২-১৫৮)।

হজরত ইসমাইল (আ.) এর যখন হাঁটা-চলা ও খেলাধুলা করার বয়স তখন হজরত ইব্রাহীম (আ.) কে স্বপ্নে আদেশ করা হলো, তুমি তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর নামে কোরবানি করো। ইব্রাহীম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে ১০টি উট কোরবানি করলেন। পুনরায় তিনি আবারো একই স্বপ্ন দেখলেন। অতঃপর ইব্রাহীম (আ.) আবারো ১০০টি উট কোরবানি করলেন। আবারো তিনি একই স্বপ্ন দেখে ভাবলেন, আমার কাছেতো এ মুহূর্তে আমার কলিজার টুকরা প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.) ছাড়া আর তেমন কোনো প্রিয় বস্তু নেই। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অতঃপর আমি তাকে (হজরত ইব্রাহীম আ. কে) একজন ধৈর্যশীল পুত্র সন্তানের সুসংবাদ দান করলাম।

সে যখন পিতার সাথে হাঁটা-চলার উপযোগী হলো, তিনি (ইব্রাহীম আ.) বললেন, হে আমার পুত্র! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে কোরবানি করছি। সুতরাং তোমার মতামত কি? সে (হজরত ইসমাইল আ.) বললেন, হে আমার পিতা! আপনি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছেন তা পালন করুন।

আপনি আমাকে আল্লাহর মেহেরবানিতে ধৈর্যশীলদের একজন পাবেন। অতঃপর যখন তাঁরা দু‘জন একমত হলো আর আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছার সামনে আত্মসমর্পণ করল এবং ইব্রাহীম (আ.) ইসমাইল (আ.) কে জবাই করার জন্যে কাত করে শুইয়ে দিলো; তখন আমি ইব্রাহীমকে ডাক দিয়ে বললাম, হে ইব্রাহীম, তুমি তোমার স্বপ্নকে সত্যে রূপ দিয়েছো। নিশ্চয়ই এটা ছিল ইব্রাহীম ও ইসমাইলের জন্যে একটা পরীক্ষা।

অতঃপর আমি ইব্রাহীমকে দান করলাম একটি মহা কোরবানির পশু। অনাগত মানুষের জন্যে এ (কোরবানির) বিধান চালু রেখে, তাঁর স্মরণ আমি অব্যাহত রেখে দিলাম। শান্তি বর্ষিত হোক ইব্রাহীমের ওপর। আমি এভাবেই সৎপরায়ণ ব্যক্তিদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।’ (সূরা আস সফফাত-১০১-১০৯)।

কোরবানির তাৎপর্য ও গুরুত্ব : হজরত জায়েদ ইবনে আরকাম (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কতিপয় সাহাবা রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.) কোরবানি কী? রাসূল (সা.) বললেন, কোরবানি মুসলিম মিল্লাতের বা জাতির পিতা ইব্রাহীম (আ.) এর সুন্নাত। তারা আবারো প্রশ্ন করলেন, এর মধ্যে আমাদের জন্যে কি আছে? রাসূল (সা.) বললেন, কোরবানির পশুর প্রতিটা পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি আছে।

তারা বললেন, ভেড়ারতো অসংখ্য পশম আছে। রাসূল (সা.) বললেন, ভেড়ার প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি দেয়া হবে, যদি তা খালেস নিয়তে কোরবানি করা হয়’(ইবনে মাজাহ)। আবু দাউদ শরীফের এক হাদিসে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সা.) বলেছেন, আল্লাহর নিকট সবচেয়ে মর্যাদার দিন হচ্ছে কোরবানির দিন।

কোরবানির শিক্ষা : কোরবানি কোনো চাপ বা জবরদস্তি বিষয় নয়। মানুষ স্বেচ্চায় তার প্রতিপালকের সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় সবচাইতে প্রিয় বস্তু ত্যাগ করার মানসিকতা সৃষ্টি করে। যেমন হজরত ইব্রাহীম (আ.) শুধু মাত্র স্বপ্নে দেখেছেন, তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর রাহে কোরবানি করো। আর অমনি তিনি তাঁর আদরের একমাত্র সন্তান হজরত ইসমাইল (আ.)কে কোরবানির জন্যে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত ছিলেন।

পৃথিবীতে মানুষের কাছে সবচাইতে আকর্ষণীয় বস্তুর মধ্যে অর্থ-সম্পদ বা টাকা-কড়ি আর সন্তান অন্যতম। এই অর্থ-সম্পদের মোহ ত্যাগের এ মানসিকতা সৃষ্টি করাই হচ্ছে কোরবানির শিক্ষা। কোরবানি আমাদের ঈমান ও তাকওয়া বৃদ্ধি করে ও পরকালের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করে। রাসূল (সা.) নির্দেশ করেছেন, হে লোকসকল তোমরা ত্র“টিমুক্ত ও উত্তম প্রাণি কোরবানি করো, কারণ কোরবানির এ পশুগুলো হবে তোমাদের জান্নাতে যাওয়ার বাহন’(বায়হাকি)।

কোরবানি সচ্ছল সব মুসলমানের ওপর ওয়াজিব। কোরবানির গোশতের ওপর আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, গরিব-মিসকিন ও মুসাফিরের হক আছে। খেয়াল রাখতে হবে সমাজের কোনো একজন ব্যক্তিও যেন কোরবানির গোশত থেকে বঞ্চিত না হয়। কিন্ত কোরবানির চামড়া শুধু মাত্র জাকাতের হকদারদেরই হক।

কোরবানির ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ : আমাদের সমাজে উট, গরু, মহিষ এ ধরনের পশু ৭ ভাগে কোরবানি করা হয়। এক্ষেত্রে সমমনা ও সম-আর্থিক সঙ্গতি সম্পন্ন লোকদেরই একত্রে কোরবানি করা উচিত। অনেকেই আবার কোরবানির পশুতে আকিকার জন্যে এক ভাগ বা দুই ভাগ রাখেন। এতে আকিকা সহিহ হবে না। আকিকার জন্যে ছেলে হলে দু‘টি ভেড়া বা বকরি আর মেয়ে হলে একটি ভেড়া বা বকরি নির্ধারণ করতে হবে। আর মনে রাখতে হবে কোরবানির সাথে আকিকার কোনো সম্পর্ক নেই। কোরবানি ঈদুল আজহার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ও ধনীর জন্যে এটা আনন্দ আর গরিবের জন্য স্বস্তির।

মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে এই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে আমাদের সকলের জীবন সুন্দর করার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন। লেখকঃ- বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব। সাবেকঃ- ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।

সর্বশেষ সংবাদ

বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন কমিটি গঠন

বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন কমিটি গঠন

শ্রীমঙ্গলে কোটি টাকার খাস জমি পুনরুদ্ধার

শ্রীমঙ্গলে কোটি টাকার খাস জমি পুনরুদ্ধার

রাজস্ব আন্দোলনের পর আরও চার কর্মকর্তা বরখাস্ত

রাজস্ব আন্দোলনের পর আরও চার কর্মকর্তা বরখাস্ত

ডাকসু নির্বাচন: শেষ দিনে বিক্রি ৫৬৫ ফরম

ডাকসু নির্বাচন: শেষ দিনে বিক্রি ৫৬৫ ফরম

দৌলতদিয়ায় তীব্র স্রোতে বালুবাহী বাল্কহেড ডুবি, প্রাণে রক্ষা

দৌলতদিয়ায় তীব্র স্রোতে বালুবাহী বাল্কহেড ডুবি, প্রাণে রক্ষা

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ ঠেকাতে জেনোয়া বন্দরে সৌদি জাহাজ আটক

ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ ঠেকাতে জেনোয়া বন্দরে সৌদি জাহাজ আটক

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে নিয়ে সংশয়-নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে নিয়ে সংশয়-নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন মামলায় গোয়ালন্দে ৪ আ.লীগ নেতা গ্রেফতার

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন মামলায় গোয়ালন্দে ৪ আ.লীগ নেতা গ্রেফতার

জাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী হামলায় ১৮১ জনের শাস্তি ঘোষণা

জাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী হামলায় ১৮১ জনের শাস্তি ঘোষণা

শুক্রবারের মর্যাদা ও শিক্ষা !

শুক্রবারের মর্যাদা ও শিক্ষা !

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

কুরআন শিক্ষা ও নৈতিক জীবন

কুরআন শিক্ষা ও নৈতিক জীবন

আজ শুক্রবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫, হিজরী ৩ রজব ১৪৫২। মুসলিম সমাজে কুরআনের শিক্ষা ও নৈতিকতার গুরুত্ব নিয়ে আজ বিভিন্ন মসজিদ ও ইসলামিক শিক্ষা কেন্দ্রে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধর্মবিশেষজ্ঞরা বলেন, কুরআনের আলোকে জীবন পরিচালনা করলে ব্যক্তি ও সমাজ উভয়েই নৈতিক ও আত্মিক উন্নতি লাভ করতে পারে। আজকের কর্মসূচিতে কুরআন তিলাওয়াত ও তাফসির পাঠ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা যুবসমাজকে কুরআনের শিক্ষার সঙ্গে মানিয়ে নৈতিকতা,

সত্যিকারের ধন-সম্পদ আল্লাহর ভয়

সত্যিকারের ধন-সম্পদ আল্লাহর ভয়

মানুষ দুনিয়ায় ধন-সম্পদ অর্জনের পেছনে সব সময় ছুটে চলে। কেউ অর্থ, কেউ ক্ষমতা, আবার কেউ সামাজিক মর্যাদা অর্জনকে জীবনের মূল লক্ষ্য বানিয়ে ফেলে। কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায়, প্রকৃত সম্পদ হলো আল্লাহর ভয় বা তাকওয়া। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ধন-সম্পদ হলো প্রচুর জিনিসপত্র নয়, বরং ধন-সম্পদ হলো অন্তরের সমৃদ্ধি।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম) অন্তরের এই সমৃদ্ধি হলো সেই তৃপ্তি,

কোরআন ও হাদিসে যুবসমাজের চরিত্র গঠনের গুরুত্ব

কোরআন ও হাদিসে যুবসমাজের চরিত্র গঠনের গুরুত্ব

বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ইমান এবং আমলের দৃঢ়তা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত এবং হাদিস অধ্যয়নের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। বিশেষত বর্তমান সময়ে সামাজিক ও নৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে সঠিক দিকনির্দেশনা পাওয়ার জন্য এই শিক্ষাগুলি অপরিহার্য। ইসলামি শিক্ষাবিদরা বলেন, নিয়মিত নামাজ, রোজা এবং দানের মাধ্যমে মানুষের মন ও চরিত্রের পরিশোধন হয়। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেছেন, একজন মুসলিমের জীবনের উদ্দেশ্য

শুক্রবারের মর্যাদা ও শিক্ষা !

শুক্রবারের মর্যাদা ও শিক্ষা !

ইসলামে শুক্রবারের দিনটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। কোরআন ও হাদিসে এই দিনের গুরুত্ব বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, শুক্রবার সপ্তাহের সেরা দিন, এই দিনে আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন এবং এই দিনেই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। তাই মুসলমানদের জন্য এই দিনটি ইবাদতের বিশেষ সুযোগ নিয়ে আসে। শুক্রবারের অন্যতম প্রধান আমল হচ্ছে জুমার নামাজ আদায় করা। ইসলামে

দোয়া—মুমিনের জীবনের অবলম্বন

দোয়া—মুমিনের জীবনের অবলম্বন

ইসলামে দোয়া বা প্রার্থনা আল্লাহর সাথে বান্দার সবচেয়ে সুন্দর সংলাপ। কুরআনে আল্লাহ বলেন, “আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।” (সূরা গাফির: ৬০) দোয়া কেবল চাওয়ার নাম নয়, বরং এটি বান্দার অন্তরের বিনয়, আশা এবং ঈমানের প্রকাশ। দোয়ার মাধ্যমে একজন মুমিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য কামনা করে, তা দুনিয়ার সমস্যা হোক বা আখেরাতের কল্যাণ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,