প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২১, ১০:১৮
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি ও সাবেক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন। বুধবার ভোর সাড়ে ৪টায় রাজধানীর শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে তিনি মারা যান। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
রাজধানীর গুলিস্তান পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতিব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও শায়খুল হাদিস মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি তিন ছেলে ও চার মেয়ে সন্তানের জনক। তার জানাজা নিজের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইমদাদিয়া মনিরামপুর, যশোরে অনুষ্ঠিত হবে।
বর্ষীয়ান এই আলেম বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে তাকে রাজধানীর মহাখালীর শেখ রাসেল মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এর আগে তিনি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি ছিলেন।
মুফতি ওয়াক্কাস এরশাদ সরকারের ধর্ম ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। যশোর-৫ আসন থেকে তিনি কয়েক বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দেশের শীর্ষ আলেম হিসেবেও পরিচিত। তিনি বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি, হাইয়াতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসন থেকে ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী (মটরগাড়ি প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন। পরে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে ১৯৮৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। নানা কারণে মন্ত্রিত্বের পদে বেশিদিন থাকা হয়নি।
এরপর তিনি এরশাদ সরকারের শেষদিন পর্যন্ত জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদ সরকারের পতনের পর মুফতি ওয়াক্কাস আবার সক্রিয় হন জমিয়তের রাজনীতিতে। পরে ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। এছাড়াও ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বচনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।
মুফতি ওয়াক্কাস ২০২০ সালের শেষ দিকেও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির ও ঢাকা মহানগরের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তবে কওমি মাদরাসাভিত্তিক এই সংগঠনটির সর্বশেষ সম্মেলনে প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর অনুসারীদের আমন্ত্রণ না জানিয়ে কমিটি গঠন করায় নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে হেফাজত ছাড়েন তিনি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নিজের নির্বাচনী এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেন তিনি।