শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ: গণতন্ত্রের জন্য আত্মত্যাগের চিরকালীন স্মৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার ১০ই নভেম্বর ২০২৪ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন
শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ: গণতন্ত্রের জন্য আত্মত্যাগের চিরকালীন স্মৃতি

আজ ১০ নভেম্বর, শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এই দিনে ঢাকার রাজপথে নূর হোসেনের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল স্বাধীনতার সংগ্রাম। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে সে দিন রাজপথে নামেন নূর হোসেন, বুকে ও পিঠে লেখা ছিল, "স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক"—যা তার জীবনের চূড়ান্ত অঙ্গীকার হয়ে দাঁড়ায়। 


এদিন পল্টন এলাকায় ‘জিরো পয়েন্ট’ অতিক্রম করার সময় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান নূর হোসেনসহ কয়েকজন আন্দোলনকারী। তার আত্মত্যাগ ছিল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এক সাহসী প্রতিবাদ, যা জনগণের মনকে স্পর্শ করেছিল। নূরের এই আত্মদান ছিল বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক অমূল্য মুহূর্ত। তার রক্তের ধারাতেই গড়ে ওঠে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান, যার ফলে পতন ঘটে স্বৈরশাসকের। 


শহীদ নূর হোসেনের আত্মত্যাগ শুধু এক দিনের আন্দোলনের ঘটনা নয়; এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পুনর্জন্মের শপথ। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে তার রক্তের ফসল হিসেবে গণতন্ত্রের পতাকা উত্তোলন করে বিএনপি সরকার গঠন করেছিল। সেখানেই, যেখানে নূর হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন, সেই ‘জিরো পয়েন্ট’ এখন ‘শহীদ নূর হোসেন চত্বর’ নামে পরিচিত। 


শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার বাণীতে নূর হোসেনের অবদানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “নূর হোসেনের আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। তার রক্তের ধারাতেই ৯০ সালের গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল, কিন্তু আজও সেই গণতন্ত্রের সংগ্রাম শেষ হয়নি। বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী কর্মকাণ্ড জনগণের স্বপ্নের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করছে।”


তারেক রহমান আরও বলেন, "শহীদ নূর হোসেনের স্বপ্ন ছিল এক সুষ্ঠু, স্বাধীন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, যা আজও পূর্ণ হয়নি। আমরা তার সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই।"


আজকের দিনটি শুধু শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোই নয়, বরং আমাদের গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম অব্যাহত রাখার দৃঢ় অঙ্গীকারও।