অবশেষে ভেঙে গেল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপির নতুন দাবিদার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে আবদুল করীম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে দলের একটি অংশ। গতকাল সোমবার আলাদা সংবাদ সম্মেলনে দুই অংশই নিজেদের মূল দল হিসেবে দাবি করেছে।
সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা আকরম খাঁ হলে ‘সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত নতুন কমিটির সদস্যসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘কর্নেল অলির সঙ্গে দল করা যায় না। সে জন্য আমরা আবদুল করীম আব্বাসীকে সভাপতি করে সাত সদস্যের সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করছি। সমন্বয়ক কমিটিতে আবদুল গনি, এম এ বাশার, সৈয়দ ইব্রাহিম রওনক, তৌহিদুল আনোয়ার, কাজী মতিউর রহমান ও আমি শাহাদাত হোসেন সেলিম সদস্যসচিব হিসেবে এলডিপির একটি কাঠামো ঘোষণা করছি।’ তিনি জানান, এই সমন্বয়ক কমিটির মাধ্যমে তাঁরা বিএনপির সঙ্গে যুক্ত থাকবেন এবং ২০ দলীয় জোটের শরিক দল হিসেবেও থাকবেন।
সাবেক হুইপ আবদুল করীম আব্বাসী বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই, উনার (অলি) সঙ্গে কোনো জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ রাজনীতি করতে পারবে না। উনি শুধু নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কোনো কিছু চিন্তা করেন না।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই মুহূর্তে অলি সাহেবের সঙ্গে একজন (রেদোয়ান আহমদ) ছাড়া আর কেউ নেই। অলি সাহেব যে কমিটি গঠন করেছেন, সেটা আমরা মানি না।’ অলির সঙ্গে বিভেদ কী নিয়ে—প্রশ্ন করা হলে সেলিম বলেন, ‘একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি এভাবে জামায়াতকে সমর্থন দিতে পারেন না—এটা উনাকে আমরা মুখের ওপরে বলেছি। এ জন্য আমাদের সঙ্গে তাঁর বিভেদ তৈরি হয়েছে।’ সেলিম বলেন, ‘২০০৬ সালে আমরা এলডিপি গঠন করে যে অন্যায় করেছি, যে মহাপাপ করেছি, বিএনপি আমাদের সেই অন্যায় ও পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার একটা সুযোগ দেবে।’
এদিকে একই দিন বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের একই হলে জাতীয় মুক্তিফ্রন্টের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমদ বলেন, ‘এলডিপি আমার নামে, আমি দরখাস্ত করেছি, রেজিস্ট্রেশনও আমার নামে।’ তিনি বলেন, ‘এই দল তো অন্য কেউ নেওয়ার কোনো আইনগত অধিকার নেই। এখন যদি নিজের বাবার নাম বাদ দিয়ে আমার নামে পরিচিত হন, আমার কোনো আপত্তি নাই। এটাই মূল এলডিপি।’ গত ৯ নভেম্বর এলডিপির যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তা দলের ফোরামে আলাপ করেই করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এহসানুল হুদা, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সারোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ সময় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না অতিথির আসনে কিছুক্ষণ বসে অলির বক্তব্যের মধ্যেই চলে যান।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।