বাবুগঞ্জের মীরগঞ্জ সেতু উদ্বোধন পরবর্তী হামলা ও দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হেনস্তার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিএনপিকে সতর্কবার্তা দিয়েছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এবং পরে বরিশাল প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, “আপনাদের দলের খুবই ছোট একটা অংশ যে আচরণ করছে তাতে প্রতিদিনই আপনাদের হাজার হাজার ভোট কমছে। বাবুগঞ্জ মীরগঞ্জের মাত্র এক দিনের ঘটনার কারণে সারা দেশে ১০ লাখ ভোট কমে গেছে।” তিনি আরও বলেন, এই ছোট অংশটি যদি নিয়ন্ত্রণে আনা না যায় তবে আগামী নির্বাচনে বিএনপি নিজেরাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে; কারণ খুনি, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ ও গুণ্ডাদের নিয়ে ভোট চাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হবে, যা ভোটারদের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির একাংশের আচরণ এখন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের প্রতিচ্ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। “হাসিনার ফ্যাসিবাদের সময়ও আমরা রাস্তায় ছিলাম। ভাববেন না আমরা পালিয়ে ঢাকায় চলে যাবো,” বলেন তিনি। এ সময় বিএনপির বৃহত্তর অংশকে “ভালো ও নীরব” আখ্যা দিয়ে বলেন, কিছু সংখ্যক নেতার কারণে পুরো দলের বদনাম হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি যদি বাবুগঞ্জের ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের দলীয় শৃঙ্খলায় না আনে তবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিনষ্টের দায় তাদেরই নিতে হবে। এছাড়া বহিষ্কৃত গুণ্ডা স্বভাবের নেতাদের পুনর্বহাল করাকে নির্বাচনপূর্ব “খারাপ লক্ষণ” হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
ফুয়াদ অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন এলাকায় তাদের নেতাকর্মীদের ওপর হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের আগের দিন তাদের এলাকায় না ঢোকার সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে। “এই বাস্তবতায় ভালো নির্বাচন আশা করা যায় না,” মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ৩১ দফা সংস্কারের আগে দলের ভেতর থেকে অপরাধী উপাদান সরিয়ে প্রকৃত গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপিকে দাঁড় করাতে হবে।
সকল রাজনৈতিক দলকে শান্তি ও সহনশীলতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনি আমার বিরুদ্ধে মিছিল, সমালোচনা, যুক্তিতর্ক করবেন—এসব বৈধ; কিন্তু মারধর, হুমকি, অবাঞ্ছিত ঘোষণা কেন?” তিনি অভিযোগ করেন, বরাদ্দ গরু চুরি করা ইউএনও অফিসের দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিরাও তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে—যা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক-সামাজিক পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, তারা ধৈর্য্য ধরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এই সহনশীলতার সীমা আছে। “যারা গতকাল কিলঘুষি খেয়েছে—এরা কেউ রাস্তার ছেলে না,” মন্তব্য করেন তিনি।