নগর ভবন ছাড়িয়ে রাজপথে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ইশরাকের

জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বুধবার বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার কথাবার্তার লাগাম না টানলে এবং আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক কোনো পদক্ষেপ নিলে আন্দোলন রাজপথে গড়াবে। তিনি জানান, জনগণের ভোগান্তি কমাতে নগর ভবনের চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে, তবে আন্দোলনের মূল দাবি এখনো অটুট রয়েছে।

ইশরাক বলেন, নাগরিক সেবা সচল রাখার জন্য আন্দোলনকারীরা আপাতত প্রতীকী কর্মসূচির মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে যাবে। তিনি বলেন, সরকারের চক্রান্ত ছিল সেবা বন্ধ করে আন্দোলনকারীদের ঘাড়ে দোষ চাপানো। কিন্তু আন্দোলনকারীরা সেই চক্রান্ত ভেস্তে দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, ঈদের পর কর্মকর্তারা সেবামূলক কার্যক্রম চালু করতে চাইলে উপদেষ্টা ও সচিব বাধা দেন এবং জন্ম, মৃত্যু, নাগরিক সনদসহ গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলো না দিতে নির্দেশ দেন, যা জনগণকে জিম্মি করার শামিল। এমনকি এসব নির্দেশে আঞ্চলিক কর্মকর্তারাও বাধ্য হয়ে সেবা কার্যক্রম স্থগিত করেন।

ইশরাক বলেন, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছে কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা। এদের কেউ কেউ বিএনপির পরিচয়ে থাকলেও দলীয়ভাবে তারা অচল। এর পেছনে মূল হোতা হিসেবে গোলাম কিবরিয়া রুবেলের নাম তুলে ধরেন তিনি, যাকে ঘিরে বহু দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে এবং যিনি গতকালের হামলার পেছনে ছিলেন বলে দাবি করেন ইশরাক।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রুবেল নাকি উপদেষ্টার আশীর্বাদ নিয়ে নগর ভবনে ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছে এবং আন্দোলনের শুরু থেকেই রুবেল ছিলেন বিরোধী অবস্থানে। ইশরাক দাবি করেন, এই ষড়যন্ত্রকারীরা সরকারি ছত্রছায়ায় থেকে আন্দোলন দমন করতে চায়, কিন্তু সেটি সফল হবে না।

তিনি সরাসরি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে উদ্দেশ করে বলেন, স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে কথাবার্তার সীমা রক্ষা করা জরুরি, অন্যথায় বর্তমান অবস্থা আরও উত্তপ্ত হতে পারে। তিনি জানান, আন্দোলন এখনও নিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে থাকলেও যেকোনো মুহূর্তে তা নগর ভবন ছাড়িয়ে রাজপথে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে ইশরাক সকল পক্ষকে সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার ও উপদেষ্টাদের উচিত হবে জনগণের ন্যায্য দাবি মেনে চলা এবং আন্দোলনকারীদের প্রতি দমন-পীড়ন বন্ধ করা। জনস্বার্থেই শান্তিপূর্ণ অবস্থান অব্যাহত থাকবে, তবে তা ভিন্ন পথে গড়ালে দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।