বরিশালে এক শ্রমিক সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, বর্তমান ও অতীত সরকার শ্রমিকদের কণ্ঠরোধ করেছে এবং তাদের জীবনযাপন করে তুলেছে দুর্বিষহ। ১ মে মহান মে দিবস উপলক্ষে বরিশাল মহানগর শ্রমিক দলের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের ৭ কোটিরও বেশি শ্রমিকই সরকার নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখলেও তারা সবসময় অবহেলিত। গত দেড় দশকে তাদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নের অনুমতি না দেওয়ায় তারা দাবিদাওয়া জানাতেও পারছে না।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের আমলে তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামলে, পুলিশ ও র্যাবের গুলিতে প্রাণ হারাতে হয়েছে আঞ্জুমান আরা খাতুন, জালাল উদ্দিন ও রাসেল নামের শ্রমিকদের। রিজভী দাবি করেন, এই হত্যাকাণ্ডগুলি ছিল পরিকল্পিত। এসব রক্তেই ৫ আগস্টের ‘মহাবিপ্লব’ রচিত হয়েছে, যেখানে শতাধিক শ্রমিক শহীদ হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের ভুল নীতির কারণে কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকটের পাশাপাশি বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও সিন্ডিকেটের কারণে শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। লাখ লাখ শ্রমিক আজ চাকরি হারিয়েছে, পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সমাবেশে রিজভী বলেন, ড. ইউনুস নেতৃত্বাধীন সরকারকে জনগণের কথা শুনতে হবে। নির্বাচিত না হলেও, এই সরকার জনগণের সমর্থিত — তাই তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন জরুরি। মানবতার নামে যদি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হয়, তবে সেটা মেনে নেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আজ আত্মগোপনে। তার অবস্থান কেউ জানে না, তিনি এখন ভিডিও বার্তা দিয়ে নিজের অবস্থান জানাচ্ছেন — ওসামা বিন লাদেনের মতো। তার বিরুদ্ধে ২২৭টি হত্যা মামলার প্রেক্ষিতে এসব মন্তব্য সামনে এসেছে, যা ফরেনসিক পরীক্ষায় সত্য প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেন রিজভী।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. রফিকুল ইসলাম, কুদ্দুসুর রহমান, ওবায়দুল হক চানসহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা। বক্তৃতার শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি নগরীর প্রধান সড়কসমূহে প্রদক্ষিণ করে।