রাজবাড়ীতে দর্জি দোকানে ভিড়, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের অপেক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মইনুল হক মৃধা-রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার ১৫ই মার্চ ২০২৫ ০৭:০৫ অপরাহ্ন
রাজবাড়ীতে দর্জি দোকানে ভিড়, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের অপেক্ষা

রাজবাড়ী জেলার পাঁচটি উপজেলার দর্জি দোকানগুলোতে এখন কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পোশাক তৈরির চাপ বাড়ায় দিন-রাত সেলাই মেশিন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। দর্জি দোকানগুলোর ভিড়ে জমছে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষরা। সাধারণত এই শ্রেণির মানুষরাই আসেন এসব দোকানে। কারণ বাজারে তৈরি পোশাকের দাম অনেক বেশি। দর্জির দোকানগুলোতে তুলনামূলক কম খরচে পোশাক বানানো যায়।


রাজবাড়ী জেলার পাংশা, গোয়ালন্দ, বালিয়াকান্দি, কালুখালী ও সদর উপজেলার দর্জি দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাজারের তৈরি পোশাকের চেয়ে এখানে কম খরচে জামা তৈরি করা যায়, তাই এখানকার দর্জি দোকানগুলো অনেকের ভরসা। তবে, দর্জিরা জানান, বছরের দুটি ঈদ এবং পহেলা বৈশাখ এলেই তাদের দোকানে ভিড় বাড়ে। অন্যান্য সময় তাদের ব্যবসা মন্দা থাকে। এজন্য অনেক দর্জি সংসার চালানোর জন্য অন্য পেশায় যুক্ত হতে বাধ্য হন। কেউ কেউ গ্রাম ছেড়ে রাজধানীতে চলে যান, কারণ এখানে কাজের নিশ্চয়তা থাকে না।


রাজবাড়ী সদরের দর্জি হাসেম শিকদার জানান, ঈদের সময় ভালো আয় হয়, তবে বছরের বাকি সময় কাজের অভাব থাকে। অনেকে অটোরিকশা চালায় কিংবা কৃষিকাজ করে সংসার চালায়। বালিয়াকান্দি উপজেলার দর্জি আজাদ মোল্লা বলেন, আগে সারা বছর কাজ থাকত, কিন্তু এখন তৈরি পোশাকের কারণে দোকানে ভিড় কমে গেছে। তিনি জানান, এখন অনেকেই ফুটপথে নতুন বা পুরনো পোশাক ক্রয় করছেন।


এসময় একাধিক ক্রেতা জানান, তারা কৃষি কাজ করেন এবং তাদের মাসিক আয়-রোজগার নেই। ফসল বিক্রি করে পরিবারের নতুন পোষাক কিনতে হয়। স্থানীয় দর্জি দোকানে অল্প টাকায় পোশাক বানানো যায় এবং তা অনেক টেকসই হয়। ষাটোর্ধ এক ব্যক্তি শুকুর আলি বলেন, দর্জি দোকানের পোশাকের মান আলাদা। এই পোশাক দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায় এবং অল্প টাকায় বানানো যায়।


গোয়ালন্দ উপজেলার বাসিন্দা হামেদ হোসেন বলেন, বর্তমান সংসার চালিয়ে নতুন পোষাক ক্রয় করা তাদের জন্য অসম্ভব। তারা বলেন, “তৈরি পোশাক বাজারে দাম বেশি, তাই আমরা দর্জির কাছে জামা বানাই। দামও কম পড়ে, ফিটিংসও ভালো হয় এবং জামা টেকসই হয়।”


একাধিক দর্জিরা জানান, যদি তারা সারা বছর কাজের নিশ্চয়তা পেতেন, তবে তাদের জীবিকা আরও স্থিতিশীল হতো। তারা মনে করেন, এই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর নজর দেওয়া প্রয়োজন।