টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে ছাই ৬২ ঘর, শিশুর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
আমান উল্লাহ কবির,নিজস্ব প্রতিনিধি টেকনাফ (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৭ই জানুয়ারী ২০২৫ ১১:২১ পূর্বাহ্ন
টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে ছাই ৬২ ঘর, শিশুর মৃত্যু

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৬২টি ঘর পুড়ে গেছে এবং এক শিশুর করুণ মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের ক্যাম্প-২৬ এর জি-৩ ব্লকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। আগুনের সূত্রপাত হয় মাঝি ফারকের বাড়ি থেকে, যা দ্রুত আশপাশের স্থাপনায় ছড়িয়ে পড়ে।  


স্থানীয় রোহিঙ্গারা প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালায়। পরে টেকনাফ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দুইটি ইউনিট এসে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে ঘরবাড়ি, মালপত্রসহ সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করা যায়নি।  


ফায়ার সার্ভিসের দলনেতা মুকুল কুমার নাথ জানান, আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় রোহিঙ্গারা ভয়াবহ আতঙ্কের মধ্যে পড়ে। স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।  


আগুনের সূত্রপাতের কারণ এখনো নিশ্চিত নয়। তবে প্রাথমিক তদন্তে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের একটি দল বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে এবং ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নির্ধারণের চেষ্টা চলছে।  


শুক্রবার সকালে ক্যাম্প ইনচার্জ মো. হান্নান সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সহায়তার আশ্বাস দেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য এনজিও সংস্থাগুলো কাজ শুরু করেছে।  


স্থানীয় রোহিঙ্গারা জানান, এমন অগ্নিকাণ্ডে তাদের জীবনে আবারও সংকট দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই অনেক পরিবার তাদের বসবাসের জায়গা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।  


এনজিও কর্মীরা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে জরুরি খাদ্য, পানি এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে ঘরবাড়ি পুড়ে যাওয়ায় তাদের পুনর্বাসন দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার হতে পারে।  


স্থানীয় প্রশাসন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্যবস্থাপনা কমিটি দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এমন অগ্নিকাণ্ড ভবিষ্যতে প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।