বহু জ্বল ঘোলার পর সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
আমান উল্লাহ কবির, উপজেলা প্রতিনিধি টেকনাফ (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৬শে নভেম্বর ২০২৪ ১০:৫২ পূর্বাহ্ন
বহু জ্বল ঘোলার পর সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে ২৮ নভেম্বর থেকে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হচ্ছে। তবে, পরিবেশ সুরক্ষা এবং পর্যটন ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে কিছু নিষেধাজ্ঞা এবং সীমাবদ্ধতা বজায় রাখা হয়েছে, যা গত মাসে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছিল।


কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) নিজাম উদ্দিন আহমেদ সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, "কেয়ারি সিন্দাবাদ" নামে একটি জাহাজ সংস্থা সেন্টমার্টিনে যাত্রী পরিবহনের জন্য আবেদন করেছে। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং ২৮ নভেম্বর থেকে তারা যাত্রী নিয়ে জাহাজ চালাতে পারবে।


এর আগে, ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি যৌথ কমিটি গঠন করে। কক্সবাজার সদর ও টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা এই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনীত হন, এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে কাজ করবেন। এই কমিটি পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—প্রতিদিন ২,০০০ জনের বেশি পর্যটক সেন্টমার্টিনে প্রবেশ করতে পারবেন না।


এছাড়া, পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ডের অ্যাপের মাধ্যমে অনুমোদিত ট্রাভেল পাস নিয়ে সেন্টমার্টিনে যাত্রা করতে হবে। জাহাজে পলিথিন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং পরিবেশবান্ধব ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে রাতযাপন নিষিদ্ধ, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের অনুমতি দেওয়া হবে। তবে, একদিনে ২,০০০ জনের বেশি পর্যটক প্রবেশ করতে পারবেন না এবং রাতে দ্বীপে আলো ব্যবহার, শব্দদূষণ এবং বারবিকিউ পার্টি নিষিদ্ধ থাকবে।


এদিকে, এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা কিছু দিন আগে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তাদের দাবি ছিল, এই বিধিনিষেধ পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্বীপের পরিবেশ রক্ষা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।


পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচলের অনুমতি পাওয়ায় আনন্দিত হলেও, তারা নতুন বিধিনিষেধের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে বাধ্য হবেন, যা দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা এবং পর্যটনের টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।