ছাত্রলীগ অধ্যুষিত ৪০ তম বিসিএএস পুলিশ প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: রবিবার ২০শে অক্টোবর ২০২৪ ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
ছাত্রলীগ অধ্যুষিত ৪০ তম বিসিএএস পুলিশ প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত

বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহীতে অনুষ্ঠিতব্য ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হয়েছে। রোববার (২০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ছিল, যেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী উপস্থিত থাকার কথা ছিল। 


শনিবার রাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, অনুষ্ঠানটি স্থগিত করার কারণ অনিবার্য এবং বিস্তারিত কারণ এখনও প্রকাশ করা হয়নি। 


কুচকাওয়াজ স্থগিত হওয়ার কারণে আইজিপি ময়নুল ইসলাম, র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু এবার তাদের জন্য অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।


এছাড়াও, অভিযোগ উঠেছে যে এই ক্যাডার থেকে ৬২ জনকে নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় স্থান পাওয়া নিয়ে বিতর্ক চলছে। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর সারদা পুলিশ একাডেমিতে যোগদান করা এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেককে এস বি এবং এন এস আই রিপোর্টের কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, আওয়ামী লীগের প্রতি ন্যায়সঙ্গত হয়ে উঠেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। 


অভিযোগ আছে, শেখ হাসিনার সরকার তিনটি ক্যাটাগরিতে ৪০তম বিসিএস থেকে ওই ৬২ জনকে এএসপি হিসাবে নির্বাচন করে। ক্যাটাগরিগুলো হলো- ছাত্রলীগ, গোপালগঞ্জের বাসিন্দা এবং দলীয় ক্যাডার। সূত্র মতে, ওই সময় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অনেকে বাদ পড়েন শুধু এসবি এবং এনএসআইয়ের রিপোর্টের কারণে। আওয়ামী লীগ না করলে কাউকেই নিয়োগ দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে ফলাফল যত ভালোই হোক পরিবারের কেউ বিএনপি অথবা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ আমলে সম্পন্ন হওয়া তিনটি ব্যাচের বিসিএসের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।


এখন, প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের আগে অভিযুক্ত ৬২ জনের পরীক্ষার ফলাফল এবং রিপোর্ট পর্যালোচনা চলছে। কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন, যাতে নিশ্চিত হতে পারেন যে, এই ৬২ জনের মধ্যে নিরীহ কেউ আছে কিনা। এই প্রক্রিয়া শেষে পুনরায় কুচকাওয়াজের তারিখ ঘোষণা করা হবে। 


এ ঘটনা বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে একটি নতুন দিক উন্মোচন করছে, যা পুলিশ বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া ও এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। সকলের নজর এখন ভবিষ্যতে কুচকাওয়াজের নতুন তারিখ এবং এই ঘটনার প্রভাবের দিকে।