মদনে আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ফাঁকা গুলি

নিজস্ব প্রতিবেদক
এ কে এম আব্দুল্লাহ, জেলা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা
প্রকাশিত: সোমবার ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৪৯ অপরাহ্ন
মদনে আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ফাঁকা গুলি

মদন উপজেলা ছাত্রলীগকে নিস্ক্রিয় বলায় এ নিয়ে সোমবার দুপুরে মদনের চৌরাস্তা মোড়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সমর্থকদের সাথে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় মুজিবুর রহমান নামের এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।


   স্থানীয় এলাকাবাসী, আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ফ্রেরুয়ারি মদনে এসডিএফ নামের একটি প্রকল্পের অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসান অংশ গ্রহণ করেন। ওই দিন নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান সাজ্জাদুল হাসানের সঙ্গে অনুষ্ঠানে আসেন। বিকেলে তারা উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে শান্তি সমাবেশ করেন। 


সভা শেষে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহম্মদ খানের কাছে উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটিকে নিস্ক্রিয় বলে অভিযোগ করেন।  


পরে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সক্রিয় হতে বলেন। এতে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক টিপু ইসলাম সোহাগ ১২ ফেব্রুয়ারী রাতে চৌরাস্তার মোড়ে উপজেলা আওয়ালীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমকে দেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ছাত্রলীগকে নিস্ক্রিয় বলায় উপজেলা ছাত্রলীগ সোমবার সকালে মদনে এক প্রতিবাদ মিছিল বের করে। 


এরই জের ধরে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম সমর্থক ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষই দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থান নেয়। পরে দু-পক্ষের মাঝে ঘন্টা ব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। এ সময় মুজিবুর রহমান নামের এক পুলিশ সদস্য আহত হয়।


    উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম জানান,‘ উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মকান্ড নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের সাথে আমার কথা হয়। এ নিয়ে ছাত্রলীগের আহবায়ক সোহাগ রবিবার রাতে চৌরাস্তার মোড়ে আমাকে গালিগালাজ করে। সোমবার সকালে তারা মিছিল শেষে আমার একজন সমর্থকে ধাওয়া দেয়। এ নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।’


   এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক টিপু ইসলাম সোহাগের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমকে গালমন্দ করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন,‘উপজেলা আওয়ামালীগের সাধারণ সম্পাদক মদন উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটিকে নিস্ক্রিয় বলে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের কাছে নালিশ দিয়েছে। আমরা সকালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নানা উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের প্রশংসা করে মিছিল শেষে কেন্দুয়া রোডে আসলে বিএনপির লোকজন নিয়ে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমাদের ওপর হামলা করেছে।’


    নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান জানান,‘ মদন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের সাথে মদন উপজেলা ছাত্রলীগের নিস্ক্রিয়তা নিয়ে আমার কথা হয়। বিষয়টি নিয়ে পরে আমি ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সাথে কথা বলি। এই বিষয়টি নিয়ে আজকের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা আমার জানা নেই।’


 নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আলম শাওন জানান,‘ মদন উপজেলার ছাত্রলীগ খুবই দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। আর মদনে যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে এটা তাদের ব্যাক্তিগত আক্রোশ।’


    মদন থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান জানান,‘ দু-পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়া হয়েছে। এ সময় আমার এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’