গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। আগামী সপ্তাহে দেশব্যাপী মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, দু-একদিনের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচির তারিখ জানানো হবে।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরও অংশ নেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
বিজ্ঞপ্তিতে দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি হওয়ায় জনগণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অথচ সরকার নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে। ভোটারবিহীন সরকারের জনগণের কাছে কোনো দায়বদ্ধতা না থাকায় চাল, ডাল, তেল, সবজি এবং অন্যদিকে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষ বিশেষ করে কৃষক, শ্রমিক মেহনতী মানুষের প্রকৃত আয় মারাত্মকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। কিছু মানুষ সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে, অন্যদিকে গ্যাস, পানি ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে যাতায়াত ব্যয়, পরিবহণ ব্যয়, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে প্রায় ৫ লাখ টাকা বেতনে কয়েক দফা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে দুর্নীতির যাবতীয় সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। দফায় দফায় গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করে সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে ফেলেছে সরকার। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও মূল্য হ্রাসের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আগামী সপ্তাহে দেশব্যাপী মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, হাট সভা ও হ্যান্ডবিল বিতরণে কর্মসূচি প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, সভায় দুর্নীতি দমন কমিশনের বরখাস্তকৃত উপসহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিনের চাকরি থেকে বরখাস্ত করায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে, একজন সৎ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, দুর্নীতি দমন কমিশনের সব কর্মকর্তা নিজেরাই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং বিরোধী দল দমনে সরকারের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করছে। বিএনপি অবিলম্বে এ বিষয়টির সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছে। সভা মনে করে, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতিতে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও স্থায়ী কমিটির সভায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের প্রভাতফেরি ও শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় হামলা ও নেতাকর্মীদের আহত করার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সভা মনে করে- এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, আওয়ামী লীগ একুশের চেতনাকে সুপরিকল্পিতভাবে ভূলণ্ঠিত করছে। তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করার নিন্দা জানানো হয়। একইসঙ্গে অবিলম্বে সব মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।