রাজধানীর বনানীতে সামরিক কবরস্থানে পিলখানার শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধানরা শ্রদ্ধা জানান।
এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও বিজিবির পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। শহীদ পরিবারের সদস্যরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। শেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে সেনা কর্মকর্তা ও বেসামরিক নাগরিকসহ ৭৪ জন নিহত হন। ইতিহাসের এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দিনটিকে এবার প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
সরকার সম্প্রতি ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা পরিপত্রে দিবসটি ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং যথাযথভাবে পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মনোবলে চরম আঘাত হানে। বহু সেনা কর্মকর্তা নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন, যা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
ওই ঘটনার পর লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়, যা পরে নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর আদালত রায় ঘোষণা করেন, যেখানে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।
সর্বশেষ চলতি বছরের জানুয়ারিতে আদালত ২৫০ জন বিডিআর জওয়ানকে জামিন দেন এবং ১৭৮ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়। মামলাটি দেশের ইতিহাসের অন্যতম বড় বিচারিক প্রক্রিয়ার উদাহরণ হয়ে আছে।
জাতীয় শহীদ সেনা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে সেনা সদস্যদের আত্মত্যাগের স্মরণে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল এবং শ্রদ্ধা নিবেদন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।