মধ্য এশিয়ার মুসলিমপ্রধান দেশ কিরগিজস্তানে নিকাব পরিধান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকর হয়েছে বলে রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। নতুন এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে ২৩০ ডলার জরিমানা গুনতে হবে। কিরগিজস্তানের আইনপ্রণেতাদের দাবি, নিরাপত্তার স্বার্থে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যাতে প্রকাশ্যে মানুষের মুখ দেখা যায় এবং সহজে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
তবে দেশটির বিরোধী পক্ষ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে নারীদের পোশাকের স্বাধীনতা খর্ব হবে এবং এটি এক ধরনের বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ। গত কয়েক বছর ধরে কিরগিজস্তানে নিকাব পরা নিয়ে বিতর্ক চলছিল। শেষ পর্যন্ত সরকার নিকাব নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করল।
এর আগে মধ্য এশিয়ার একমাত্র দেশ হিসেবে কিরগিজস্তানে স্কুল ও সরকারি ভবনে নিকাব পরার অনুমতি ছিল। অন্যদিকে, মধ্য এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও কাজাখস্তানে আগেই হিজাব ও নিকাব পরিধান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নতুন এই আইন কার্যকর হওয়ার পর কিরগিজস্তানও একই পথ অনুসরণ করল।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, মুখ ঢাকা থাকলে অপরাধীদের শনাক্ত করা কঠিন হয়, তাই এ ধরনের পোশাক পরিধান সীমিত করা হয়েছে।
বিরোধীরা বলছেন, এটি মূলত ইসলামের ওপর নিষেধাজ্ঞার সূচনা। তাদের দাবি, একজন নারী কী পরবেন, তা নির্ধারণের অধিকার সরকারের নয়। তাদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ধর্মীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী।
স্থানীয় ধর্মীয় নেতারাও সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। তারা বলছেন, কিরগিজস্তানে আগে কখনো পোশাক নিয়ে সরকারি বিধিনিষেধ ছিল না, তাই নতুন এই আইন নারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।
নিকাব নিষিদ্ধের পর দেশটিতে সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন, আবার কেউ এটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্য এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় বিধিনিষেধের অংশ হিসেবে কিরগিজস্তানের এই পদক্ষেপ এসেছে। সরকার এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখবে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।