জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ঢাকায় কার্যালয় স্থাপনের বিরোধিতা- হেফাজতে ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক
সোলাইমান শিকদার - স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ঢাকায় কার্যালয় স্থাপনের বিরোধিতা- হেফাজতে ইসলাম

বাংলাদেশে সাধারণ আলেম সমাজ এবং সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ঢাকায় কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি স্মারকলিপি প্রকাশ করা হয়েছে। স্মারকলিপিতে উদ্বেগ জানানো হয়েছে যে, এই পদক্ষেপ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে বিদেশি হস্তক্ষেপ বাড়িয়ে তুলবে এবং দেশের সার্বভৌমত্বের উপর হুমকি সৃষ্টি করবে।


স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, "বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার রক্ষায় যথেষ্ট কার্যকর, তাই বিদেশি সংস্থার উপস্থিতি এই বিষয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।" এছাড়া, স্থানীয় আইন ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি সম্ভাব্য আঘাতের কথা তুলে ধরা হয়েছে, যা দেশের জনগণের বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে। বিশেষ করে, মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।


স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, "ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয় স্থাপনের ফলে দেশের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। এতে বিদেশি হস্তক্ষেপ ও নজরদারি বাড়বে, যা জাতীয় আইন ও বিচার ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে।" 


সাধারণ আলেম সমাজের মতে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নীতি অনেক সময় ইসলামিক মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, যা মুসলিম দেশসমূহের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা এবং আভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।


প্রেরকদল জাতিসংঘ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে যে, তারা ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক। তারা মনে করেন, দেশের জনগণ তাদের নিজস্ব ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে মানবাধিকার রক্ষায় সক্ষম।


এই প্রসঙ্গে, প্রেরকদল আরও বলেন, "আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সম্মান করি, তবে আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ থাকা উচিত।" 


সবশেষে, তারা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক পরিসরে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় খোলার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। আমাদেরও উচিত একই পদক্ষেপ নেওয়া।" 


এভাবে, সাধারণ আলেম সমাজ ও সচেতন নাগরিকদের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে কাজ করবে।