প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১:২৮
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের জেলা কারাগারের জেলার মামুনুর রশিদ যেন ঝিনাইদহের জমিদার! ঝিনাইদহ শহরের বাইপাস, ভুটিয়ারগাতি ও হাটগোপালপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এই সম্পদের অধিকাংশই বিভিন্ন নামে এবং স্বজনদের নামে কিনেছেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ির সম্পদের পরিমাণ দেখে মনে হচ্ছে তিনি এক জমিদার পরিবারের সন্তান।
মামুনুর রশিদের বিপুল পরিমাণ জমি, বাড়ি, গাড়ি এবং ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট থাকার পরেও তিনি আবারো হাটগোপালপুর বাজারে দুই তলা বাড়ি ও প্রায় আড়াই কোটি টাকার জমি কিনতে বায়না করেছেন। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, তিনি কীভাবে এত সম্পত্তির মালিক হলেন?
তথ্য অনুযায়ী, মামুনুর রশিদ ফরিদপুর জেলার বাসিন্দা, তবে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে জেলার হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি পূর্বে ঝিনাইদহ, যশোর, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, যেখানে তিনি কর্মরত ছিলেন, সেখানেই দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন।
২০১২ সালে ঝিনাইদহে ডেপুটি জেলার হিসেবে কাজ করার সময় দেলোয়ার হোসেন দুর্লভ নামের এক দালালের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। সেই সম্পর্কের মাধ্যমে তিনি ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন স্থানে কয়েক কোটি টাকার জমি ক্রয় করেন। সম্প্রতি, হাটগোপালপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম হোসেনের ১২ শতক জমি এবং মার্কেটসহ দুই তলা বাড়ি কেনার জন্য বায়না করেছেন, যার মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
অভিযোগ রয়েছে, মামুনুর রশিদ তার অবৈধ সম্পত্তি এবং নগদ টাকা দেলোয়ার হোসেনের কাছে জমা রেখেছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেছেন, "জেলারের কাছে এত টাকা আসছে কোথা থেকে? এটা খতিয়ে দেখা দরকার।"
ঝিনাইদহ সচেতন নাগরিক সমাজের সাবেক সভাপতি সায়েদুল আলমও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, "একজন জেলার এত সম্পদ কিভাবে হলো, তা তদন্ত করা প্রয়োজন।"
মামুনুর রশিদকে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে তার সহযোগী দেলোয়ার হোসেন দুর্লভ বলেছেন, "মামুনের সাথে আমার পরিচয় হয় যখন আমি আসামী দেখতে গিয়েছিলাম।"
এ পরিস্থিতিতে, মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তদন্তের আওতায় আনা জরুরি। সুশাসনের জন্য জনগণের দাবি, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।