প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ১৫:৫৯
মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে বন্দিদের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গেছে যে একজনের জায়গায় এখন তিনজন থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ৩১৬ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এ কারাগারে বর্তমানে বন্দি রয়েছেন ৮২১ জন। এর মধ্যে ১২ জন নারী কয়েদিও রয়েছেন। ফলে একজন বন্দির জন্য নির্ধারিত ছয় ফুট জায়গার বদলে এখন দু’ফুট জায়গাতেই রাত কাটাতে হচ্ছে তাদের।
কারাগারে অতিরিক্ত বন্দির চাপে সবচেয়ে বেশি ভুগছেন সাধারণ আসামিরা। ঘুমানোর সময় এক পাশে কাত হয়ে শুয়ে থাকতে হয়, নড়াচড়ার সুযোগ নেই। দিনের বেলায় ওয়ার্ডের বাইরে কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করা গেলেও রাতে গরমের মধ্যে অস্বস্তিকর অবস্থায় থাকতে হয় তাদের।
কারা সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন থানায় রাজনৈতিক, নাশকতা ও আইনশৃঙ্খলা বিরোধী মামলায় গ্রেপ্তারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিনই নতুন আসামিদের পাঠানো হচ্ছে কারাগারে। এতেও কমছে না চাপ।
জানা গেছে, শহরের কেন্দ্রস্থলে পুরাতন কারাগারের জায়গা সংকটে পড়ায় ২০০৪ সালে গোমড়া মোকামবাজার এলাকায় নির্মাণ করা হয় নতুন জেলা কারাগার। যদিও নতুন এই কারাগারের ধারণক্ষমতা ৩১৬ জন, কিন্তু বাস্তবে সেখানে অবস্থান করছে তার আড়াই গুণ বন্দি।
অনেক বন্দি অভিযোগ করেছেন, রাত কাটে এক পাশে শুয়ে থেকে। কারো ঘুম ভেঙে গেলে অন্যজনকেও উঠে বসতে হয়। কারাবিধি অনুযায়ী প্রত্যেকের জন্য ছয় ফুট দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের জায়গা থাকা দরকার, কিন্তু বাস্তবে তারা পাচ্ছেন মাত্র দুই ফুটেরও কম।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে খালাসপ্রাপ্তদের মুক্তি এবং সহজে জামিনের ব্যবস্থা করলে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব। অতিরিক্ত গ্রেপ্তারে কারাগারে মানবেতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান তারা।
মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের জেলার কাজী মাজহারুল ইসলাম বলেন, বন্দিদের নিয়ম অনুযায়ী সব সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত বন্দির চাপ সামাল দিতে সমস্যা হচ্ছে না। ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার আয়শা আক্তার লাবনী জানান, নতুন রুম নেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।