প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৭
বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দল, যা সবাই সাধারণভাবে বিএনপি নামে চেনে, আমার কাছে একটি উদার ও গণতান্ত্রিক দল হিসেবে প্রিয়। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন একজন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা যাকে জনতা মেজর জিয়াউর রহমান বা মেজর জিয়া নামে চিনেন (১৯ জানুয়ারি ১৯৩৬ – ৩০ মে ১৯৮১)।যিনি ছিলেন বাংলাদেশের অষ্টম রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাঙালি জনগণের উপর আক্রমণ করলে তিনি তার পাকিস্তানি অধিনায়ককে বন্দি করে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণার একটি বিবৃতি পাঠ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। যার দেশপ্রেম অসাধারণ ছিল।
বিএনপি নামে এই দলটি অনেকবার সরকার পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে এবং দেশের প্রশাসন কীভাবে চালাতে হয়, তা তাদের জানা। তবে তাদের কিছু ভুল এবং সীমাবদ্ধতার কারণে গত ১৮ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে ছিল। এই সময়ে বহু নেতা ও কর্মী দল হারিয়েছে। ইলিয়াস আলী, নাসিরুদ্দিন পিন্টুর মতো নেতাদের হারিয়েছেন ভারত বিরোধিতার কারণে।২০২৪ সালের অভ্যুত্থানে বিএনপির ব্যাপক ভূমিকা ছিল। সেই সময়ও বহু নেতা ও কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যদিও দলের ইতিবাচক কর্মকাণ্ডও আছে, নেতিবাচক দিকগুলো কম আলোচিত হয়েছে। সাধারণ মানুষ ইতিবাচক দিকগুলো শুনতে ভালোবাসে, কিন্তু নেতিবাচক সমালোচনা অনেক সময় পছন্দ করে না।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক বিষয় হলো জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের নতুন আত্মপ্রকাশ। তিনি এক ভিন্ন নেতৃত্বের রূপ দেখিয়েছেন। ২০২৪ সালের পরবর্তী সময়ে বিএনপির নানা কর্মকাণ্ড ও আলোচনায় তার নেতৃত্বে ভিন্নভাবে দেশ ও দলের কথা চালানো হয়েছে, যা আমাকে বিমোহিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে দেখা যায় এবং ধরে নেওয়া যায়, আগামীতে তারা সরকার গঠন করতে পারবে।
তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো স্থানীয় নেতা ও কর্মীদের হঠকারিতা নিয়ন্ত্রণ করা। বিএনপি যেন বিরোধী মত বা অন্য দলের অংশগ্রহণ সহ্য করতে পারে না, তা যেন আগের অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি না হয়। একইভাবে, দল যেন নিজের স্বার্থে এককভাবে সব নিয়ন্ত্রণ করতে চায় না। জামাত, এনসিপি এবং গণঅধিকার পরিষদের মতো ২০২৪ সালে ভূমিকা রাখা দলগুলোও দলের সঙ্গে সহযোগিতার অংশ হতে পারে।
দলে নেতাকর্মীর সংখ্যা বেশি থাকলে নেগেটিভ দিকগুলো প্রকাশে সীমাবদ্ধতা থাকে। যখন সু-সময় আসে সবাই সুসংবাদ নিয়ে পরে থাকে তবুও আমি ও আমার গণমাধ্যমে বিএনপির ভুলগুলো প্রকাশ করতে চাই, যাতে সুবিধাবাদীরা দলকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে। রাজনীতি দেশের জন্য এবং জনগণের জন্য। কোনো একক ব্যক্তির স্বার্থের জন্য দল যেন ব্যবহার না হয়। আশা করি জনাব তারেক রহমান এই নির্দেশনা প্রকাশ্যে নিশ্চিত করবেন এবং আগামীতে দেশের নেতৃত্বে সঠিকভাবে দলকে পরিচালনা করবেন।