প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ১৭:৭
মহররম মাসকে ‘নববর্ষ উৎসব’ হিসেবে পালনের প্রবণতা ইসলামের মৌলিক চেতনার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব সুন্নী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা ইমাম হায়াত। তিনি বলেন, মহররম আনন্দের নয়, বরং শাহাদাতে কারবালার চেতনা নিয়ে আত্মশুদ্ধি ও শোকের মাস। যারা এই মাসকে উৎসবের রূপ দিতে চায়, তারা প্রকৃতপক্ষে খারেজি চিন্তা ধারার ধারক ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণার বাহক। ইসলামে বর্ষপরিক্রমা একটি প্রাকৃতিক ব্যাপার হলেও, একে উৎসব হিসেবে উদযাপনের কোনও ধর্মীয় ভিত্তি নেই। বরং এটি একটি উপলক্ষ—আত্মজিজ্ঞাসা, তওবা ও ঈমানী অবস্থান শক্ত করার জন্য।
আল্লামা হায়াত আরও বলেন, মহররম উপলক্ষে আমরা দোয়া, নফল নামাজ, সালাম এবং রহমত প্রার্থনার মাধ্যমে জীবনের নতুন সূচনা কামনা করতে পারি, কিন্তু উৎসব-অনুষ্ঠান বা আনন্দ উদযাপনের মতো কর্ম মুসলিম সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি করে। তিনি বলেন, এই মাসে কারবালার শাহাদাতের ব্যথা এবং হজরত ইমাম হোসাইন (র.)-এর আত্মত্যাগের শিক্ষা আমাদের হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। আনন্দ আর শোকের পথ এক নয়—একটি ঈমানের আত্মিক উপলব্ধি, আরেকটি বিভ্রান্তির মঞ্চ।
তিনি বলেন, শোক পালন ও উদযাপনের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। উদযাপন সুখানুভূতির বহিঃপ্রকাশ, আর শোক পালন আত্মসমালোচনা ও বেদনার উপলক্ষ। কাজেই মহররমের মূল বার্তা হচ্ছে কারবালার শাহাদাতের আত্মত্যাগকে স্মরণ করা, যা উৎসবের ভাষায় কখনো প্রকাশ হতে পারে না।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, মুসলিম মিল্লাত যেভাবে সৌদি আরব নামকরণ ও মুলুকিয়তের প্রতিষ্ঠা দিবসকে ইয়াওমে জুলুমাত হিসেবে পালন করে, তেমনি মহররমকেও কারবালার লক্ষ্য বাস্তবায়নের অঙ্গীকারে স্মরণ করা উচিত।
আল্লামা হায়াত সতর্ক করে বলেন, ইসলামী বর্ষকে কেবল চাঁদের উপর নির্ভরশীল হিসেবে দেখানোও একটি ষড়যন্ত্র। বর্ষপরিক্রমা সকল মানুষের জন্য আল্লাহর দেওয়া প্রাকৃতিক ব্যবস্থা হলেও, ইসলাম শুধুই বর্ষ নির্ভর নয়।
পরিশেষে তিনি বলেন, মহররম উদযাপন নয়, বরং অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য আল্লাহর রহমত ও হেফাজত কামনা করে দোয়ার মাধ্যমে শুরু করা উচিত। উৎসবের আবরণে ঈমান ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সচেতন থাকা সকল মুমিনের দায়িত্ব।