ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানে কাশ্মির হামলার দায় স্বীকারকারী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের সদস্য আব্দুল রশিদ গাজীর মৃত্যু হয়েছে। সিআরপিএফের গাড়ি বহরে হামলা হয়েছিল কাশ্মিরের যে পুলওয়ামাতে সেখানেই সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) প্রায় ১২ ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধ হয়। আর তাতেই প্রাণ যায় গাজীর। সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টাইমস জানিয়েছে, গাজী আদতে পাকিস্তানের নাগরিক। সাবেক এই আফগান যোদ্ধা আইইডি নামে পরিচিত বিশেষায়িত বোমার ব্যবহারের মাধ্যমে হামলা চালানোর বিষয়ে দক্ষ। পুলওয়ামার হামলায় গাড়িতে বোমা বোঝাই করে দেওয়ার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কাশ্মিরের পুলওয়ামাতে দেশটির ‘সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের’ গাড়ি বহরে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এতে বাহিনীটির অন্তত ৪০ জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছে। হামলার পর জইশ-ই-মোহাম্মদ নামের জঙ্গি সংগঠন এর দায় স্বীকার করে। ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে দেশটিকে আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সেই সঙ্গে সেনাবাহিনীকে দিয়েছে পাল্টা হামলা চালানোর স্বাধীনতা। অন্যদিকে পাকিস্তান মনে করে, গোয়েন্দা নজরদারিতে ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাই এই হামলার জন্য দায়ী।
পাকিস্তানের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় ন্যাটো বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা আব্দুল রশিদ গাজী ২০১১ সালে পাকিস্তানে ফেরে। তাকে ‘দ্বীনি’ ও ‘আসকারি’ (ধর্ম ও অস্ত্র) বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে গণ্য করা হতো। জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই আব্দুল রশিদ গাজী। প্রায় এক দশক আগে জইশ-ই-মোহাম্মদে যোগ দিয়েছিল সে। গত ডিসেম্বরের ৯ তারিখের দিকে গাজী পাকিস্তান থেকে কাশ্মিরে প্রবেশ করে। গাজীকে কাশ্মিরে পাঠানো হয়েছিল মাসুদ আজহারের ভাতিজা হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। গত ৩ জানুয়ারি জম্মু-কাশ্মিরে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলি নিহত হয় উসমান নামের মাসুদ আজহারের ওই ভাতিজা। সে বিশেষজ্ঞ স্নাইপার ছিল। ২০১৭ সালেও মাসুদ আজহারের এক ভাতিজা তালহা ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুলিতে মৃত্যুবরণ করেছিল। সেও স্নাইপার ছিল। পুলওয়ামাতে হামলার মাত্র কয়েকদিন আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক অভিযানে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিল আব্দুল রশিদ গাজী। সেই অভিযানে এক জন সশস্ত্র ব্যক্তি ও একজন ভারতীয় নিরাপত্তা রক্ষীর প্রাণ গিয়েছিল।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।