হিন্দুধর্ম মতে বিশেষ বিশেষ তিথি বা লগ্নে নির্দিষ্ট নদী-মোহনায় গোসল খুবই পবিত্র। এতে দেহ-মনের শুদ্ধি ঘটে। আর যিনি জীবনে অন্তত একবার কুম্ভ গোসল করেন, তার পুণ্য অর্জন নিশ্চিত, এমনটাই মনে করা হয়। এই ধরনের গোষ্ঠী গোসলে সবচেয়ে বেশি মর্যাদাহানি হয় নারীদের। পানিতে ভেজা যে কোনও কাপড় শরীরে লেপ্টে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যে কোনও কুম্ভমেলায়, পুণ্য গোসলে ব্যস্ত নারীদের এই স্বাভাবিক দৃশ্য আদৌ স্বাভাবিক থাকে না। পরমুহূর্তেই কয়েকশো ক্লিকে বন্দি হয়ে যায় তাদের সেই অস্বস্তির ছবি, যা কারও কাছে বিকৃত কামের সুড়সুড়ি আর কারও কাছে নিছকই একটা ছবি!
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে চলে আসা এই প্র্যাকটিসকেই তুখোড় জবাব দিল এ বছর ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদের কুম্ভে, নারী পুণ্যার্থীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ‘ওয়াটারপ্রুফ শাড়ি’। দেখতে সাধারণ শাড়ির মতোই, বাসন্তী রঙের জমি ও সবুজ পাড়। কিন্তু এই শাড়ির উপরে রয়েছে একটি ওয়াটারপ্রুফ কোটিং। যতখুশি গোসল করলেও এই শাড়ি ভিজবে না, লেপ্টে যাবে না শরীরের সঙ্গে। অর্থাৎ গোসল হল, বসন সিক্তও হল, কিন্তু আব্রু বজায় রইল নারীদের। এই অভিনব ভাবনাটি হিন্দুস্তান ইউনিলিভার গোষ্ঠীর ব্র্যান্ড ‘হামাম’-এর ‘গোসেফআউটসাইড’ ক্যাম্পেনের অঙ্গ, যার পরিকল্পনা ও রূপদানের দায়িত্বে ছিল বিখ্যাত বিজ্ঞাপন সংস্থা ‘ওগিলভি’।
এলাহাবাদে অনুষ্ঠিত ‘কুম্ভ ২০১৯’-এ, ১১ ফেব্রুয়ারি বসন্ত পঞ্চমী তিথিতে, ‘সরস্বতী গোসল’-এর দিন পুণ্যার্থী নারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় এই শাড়ি। ইউনিলিভার গোষ্ঠীর স্কিন ক্লিনজিং ভার্টিকালের জেনারেল ম্যানেজার হরমন ধিলোঁ বলেন, ‘ওয়াটারপ্রুফ শাড়ির উদ্যোগটি শুধুই নারীদের মর্যাদা রক্ষার উদ্দেশ্যে নয়, পাশাপাশি আমরা এই বার্তা দিতে চাই যে, নারীদের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন খুবই জরুরি।’
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।