শিক্ষার্থী-জনতার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও অর্থ পাচারের অভিযোগ এনেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। লন্ডন প্রতিনিধির মাধ্যমে এই অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে সংস্থাটি।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস এবং এফবিআই স্পেশাল এজেন্ট লা প্রিভোটের সহযোগিতায় একটি তদন্তে উঠে এসেছে, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর এফবিআই-এর একটি দল বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র হস্তান্তর করেছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে পৃথক তদন্ত শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) আখতার হোসেন জানান, এই অভিযোগ অনুসন্ধানে কাজ চলছে এবং শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দুদক জানিয়েছে, ৯টি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির মাধ্যমে ৭০০ কোটি ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫০০ কোটি ডলার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে আত্মসাৎ হয়েছে। অন্যান্য প্রকল্পেও অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এসব প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং অস্ত্র সরবরাহের একটি চুক্তির মধ্যস্থতা করেন। সেই চুক্তি থেকে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
টানা ১৫ বছরের শাসনকালে শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জনগণের গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা ভারতে পালিয়ে যান।
এফবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, সজীব ওয়াজেদ জয় কেম্যান দ্বীপপুঞ্জ এবং হংকংয়ের শেল কোম্পানির মাধ্যমে নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি এবং লন্ডনের বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের এই পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্তকারীরা।
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন এই অভিযোগের সত্যতা আংশিকভাবে স্বীকার করে জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি নিয়ে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করছেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ বার্ষিক প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে।
প্রতিবেদন: গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।