নৌযান ধর্মঘটে অচল পায়রা বন্দরের কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিবেদক
আনোয়ার হোসেন আনু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৭শে ডিসেম্বর ২০২৪ ০৪:৫০ অপরাহ্ন
নৌযান ধর্মঘটে অচল পায়রা বন্দরের কার্যক্রম

চাঁদপুরে জাহাজে সাত শ্রমিক হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিচারের দাবিতে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরে শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের নৌযান ধর্মঘট। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত বারোটা থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটে বন্ধ রয়েছে বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম।  


পায়রা বন্দরের আউটার এবং ইনার অ্যাঙ্কোরেজে নোঙর করা মাদার ভ্যাসেল এবং লাইটারেজ জাহাজগুলো থেকে কোনো পণ্য খালাস করা হচ্ছে না। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পায়রা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজিজুর রহমান।  


বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এম. ভি. আল-বাখেরা জাহাজে নিহত সাত শ্রমিকের পরিবারকে সরকারি পর্যায়ে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং ডাকাতি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। এসব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।  


ধর্মঘটের কারণে মালবাহী, তৈল-গ্যাসবাহী, কয়লাবাহী এবং বালুবাহী নৌযানের চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।  


ধর্মঘটের নেতিবাচক প্রভাব পায়রা বন্দরের কার্যক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় বন্দর চত্বরে আটকে রয়েছে বিপুল পরিমাণ পণ্য। এতে ব্যবসায়ী এবং আমদানিকারকরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।  


শ্রমিকদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে নৌপথে নিরাপত্তাহীনতা এবং শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে চলেছে। এর মধ্যে চাঁদপুরের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। তাদের অভিযোগ, বারবার দাবি জানানো হলেও সন্ত্রাস দমনে সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না।  


বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, পণ্য খালাস বন্ধ থাকায় আমদানিকৃত জ্বালানি ও অন্যান্য জরুরি পণ্যের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।  


এদিকে, ধর্মঘট অবসানে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনা শুরুর কোনো উদ্যোগ এখনো দেখা যায়নি। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দ্রুত দাবি পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।  


বন্দর এলাকার শ্রমিক, ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত এই অচলাবস্থা নিরসনের দাবি জানিয়েছেন।