আফগানিস্তানে কেন এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম খাল খনন করছে ?

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:০১ অপরাহ্ন
আফগানিস্তানে কেন এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম খাল খনন করছে ?

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এবং চ্যালেঞ্জিং মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দেশ হিসেবে আফগানিস্তানের নাম হয়তো সবার নিচে থাকবে। তবে, আফগানিস্তান এখন এশিয়ার সবচেয়ে বড় কৃত্রিম খাল, কোশ টেপা খাল খননের কাজ শুরু করেছে। ২৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটি দৈর্ঘ্যে সুয়েজ খালের চেয়েও প্রায় ১০০ কিলোমিটার বড়।


কোষ টেপা খালটি মূলত এশিয়ার অন্যতম দীর্ঘতম নদী আমু দরিয়ার পানি পরিবহণের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে। এই খালটি নির্মাণ করা হলে প্রায় ৫ লক্ষ হেক্টর জমি চাষাবাদের আওতায় আসবে। ফলে, আফগানিস্তানের কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।


তালেবান সরকারের অধীনে প্রকল্পটি কোন ধরনের বিদেশী সহায়তা ছাড়াই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যা অনেকের কাছে একটি বিস্ময়কর বিষয়। এই প্রকল্পটি আফগানিস্তানের খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারকে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা হিসাবে দেখা হচ্ছে।


তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা জানান, দেশীয় শ্রমিক ও প্রকৌশলীদের দিয়ে খাল খননের কাজ করা হচ্ছে। তারা বলছেন, “এটি আমাদের দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, যা কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।”


কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রকল্পের সম্পূর্ণতা এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আফগানিস্তানের মাটিতে যুদ্ধ এবং সংঘাতের কারণে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু কোশ টেপা খাল প্রকল্পটি তালেবানের দৃঢ় সংকল্প এবং উদ্যোগকে প্রতিফলিত করে।


স্থানীয় কৃষকরা আশাবাদী যে এই খাল খনন প্রকল্প তাদের জীবনে পরিবর্তন আনবে। কৃষক আলী হোসেন বলেন, “এটি আমাদের জন্য একটি নতুন দান। আমরা আমাদের ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় পানি পাব, যা আমাদের জীবনমান উন্নত করবে।”


বিশ্ববাসীর কাছে আফগানিস্তানের এই উদ্যোগ একটি বার্তা দিচ্ছে যে, দেশের উন্নয়ন সম্ভব, যদি সরকার এবং জনগণ একসঙ্গে কাজ করে। কোশ টেপা খাল প্রকল্পটি আফগানিস্তানের কৃষি উন্নয়নে একটি নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে এবং দেশটির অর্থনীতির জন্য একটি মাইলফলক হতে পারে।