ত্রাণ নয়, বিএমপি’র উপহার

নিজস্ব প্রতিবেদক
এম. কে. রানা - বার্তা প্রধান ইনিউজ৭১
প্রকাশিত: বুধবার ১৩ই মে ২০২০ ০৯:০২ অপরাহ্ন
ত্রাণ নয়, বিএমপি’র উপহার

পুলিশ শব্দটির সাথে আগে যে যেমনটি মত প্রকাশ করলেও বর্তমান বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মরণঘাতি ‘করোনা ভাইরাস’ সংক্রমনের পর থেকে বাংলাদেশ পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ধ্যাণ, ধারণা ও মতের পার্থক্য ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে করোনা মোকাবেলায় দেশ ও দেশের মানুষকে নিরাপদ রাখতে মৃত্যু ভয়কে পেছনে ফেলে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। 

মানুষের সেবা দিতে গিয়ে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন এই বাহিনীর পাঁচ সদস্য। কিন্তু থেমে নেই তাদের কার্যক্রম। বরং সহকর্মী হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে আরো উদ্যমী হচ্ছেন গর্বিত বাংলাদেশ পুলিশ। বিএমপির সুযোগ্য কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) বলেছেন, আমরা পুলিশের প্রতিটি সদস্য মিলে একটি পরিবার। তাই কাধে কাধ মিলিয়ে পরিবারের সকলে মিলে আমরা জনসেবায় সর্বদা প্রস্তুত।

শুধুমাত্র মানুষকে নিরাপদ রাখাই নয়, দেশ ব্যাপী লক-ডাউন ঘোষণার পর থেকে কর্মহীন অসহায় দরিদ্র নিপিড়িত মানুষের দ্বারে দ্বারে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির হচ্ছেন তারা। আর এটাকে তারা ত্রান নয়, পুলিশের পক্ষ থেকে উপহার বলেছেন। পুলিশের এই উপহার পেতে পারেন আপনিও। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি)’র সুযোগ্য কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) এর নিজস্ব অর্থায়নে ত্রান নয়, উপহার পৌছে দিচ্ছেন স্টাফ অফিসার (বিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার (কাউনিয়া জোন) আঃ হালিম। 

করোনা ভাইরাসরোধে বাংলাদেশ সরকার দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পরে দেশের একটি বৃহৎ অংশ কর্মহীন হয়ে পড়েন। সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংস্থা লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে এসে দাড়ায়। বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ বিতরণ, মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। তবে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে লকডাউন ঘোষণার দু’দিন পরেই কর্মহীন অসহায় মানুষের দ্বারে দ্বারে উপহার নিয়ে হাজির হন তারা। অসহায়দের পাশাপাশি বিভিন্ন মধ্যবিত্ত পরিবার যারা প্রকাশে ত্রাণ নিতে সংকোচ বোধ করেন কিংবা মুখ ফুটে সাহায্য সহযোগিতা চাইতে পারেন না। তাদের পরিচয় গোপন রেখে ত্রাণ নয়, তথ্যের ভিত্তিতে বিএমপি কমিশনারের উপহার সামগ্রী পৌছে দিচ্ছেন স্টাফ অফিসার (বিএমপি) আঃ হালিম। যিনি নিজেই সেই উপহার নিয়ে ভুক্তভোগীর দরজায় উপস্থিত হন। 

বিএমপি কমিশনারের নিজস্ব অর্থায়নে দেয়া উপহার কার্যক্রম এখনো চলছে। নিতান্ত গরীব, অসহায়, এতিম, বিধবা, জেলে, হিজড়া, বেদে, মুচিসহ বিভিন্ন মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তদের মাঝে এ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্টাফ অফিসার ও এসি কাউনিয়া জোন (বিএমপি) আঃ হালিম। তিনি জানিয়েছেন ইতিমধ্যে ৪ শতাধিক পরিবারের মাঝে কমিশনার মহোদয়ের উপহার পৌছে দেয়া হয়েছে। শীঘ্রই আরো ৫শ’ পরিবারের মাঝে উপহার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া লকডাউনের কারণে যদি কোন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার প্রকাশ্যে ত্রাণ নিতে না পারেন তাহলে বিএমপি পুলিশের (০১৭৬৯-৬৯০১১০ সহকারী পুলিশ কমিশনার আঃ হালিম) সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। 

এসি আঃ হালিম বলেন, বিশ্বব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সকলে মিলেমিশে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ালে কেউ অভুক্ত থাকবে না। বিএমপি কমিশনার মহোদয়ের নিজস্ব অর্থায়নে আমরা কিছু মানুষের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করছি। 

বিএমপি কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম-বার) বলেন, দেশ মাতৃকার টানে শপথ নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য এ বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ পুলিশ সব সময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারানোর পুলিশ সদস্যদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে বলেন, সহকর্মী হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আরো উদ্যোমী হয়ে কাজ করতে হবে। তবেই কেবল সহকর্মীদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে তাদের এই উপহার অব্যাহত থাকবে। 

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব