ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিএনপির মনোনীত মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিল ইসি। রোববার (১৯ জানুয়ারি) রাতে ইসির নির্বাচন পরিচালনা- ২ অধিশাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান এ নির্দেশ দেন। উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেমকে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়।
ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশে বলা হয়েছে, “বিএনপির মনোনীত মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়ালের ‘নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে আমার নির্বাচনী প্রচারণারত মাইক্রোফোন ভাঙচুর’ এবং ‘নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর আচরণবিধি লঙ্ঘন’ বিষয়ক গত ১৩ জানুয়ারি দাখিল করা আবেদনের বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ করা হলো।”
গত ১২ জানুয়ারি মিরপুরের মাজার রোড এলাকায় প্রচারণা শুরুর পর ডিএনসিসি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল অভিযোগ করেন, তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (ডিএসসিসি) একই দলের মেয়রপ্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনও তার প্রচারণায় হামলার অভিযোগ তুলে বলেন, আমরা এবার প্রতিপক্ষের সকল হামলা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছি।
এ বিষয়ে সেসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আতিকুল বলেন, আমরা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনেই প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। বিরোধীপক্ষকে বাধা দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমি আজ আসার পথেই দেখলাম, ধানের শীষের স্লোগান দিয়ে ভোট চাচ্ছে, আমরা তো কোনো বাধা দেইনি। বিরোধীপক্ষ মিথ্যাচার করছে। অতীতেও তারা মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। আমরা প্রতিটি মানুষের কাছে যাচ্ছি ভোট চাচ্ছি।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে চলছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত উত্তর সিটিতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের মোট ১৯টি অভিযোগ এসেছে। এর সবগুলোই নিষ্পত্তি করা হয়েছে বলে জানান উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা। এসব অভিযোগের মধ্যে আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ছিল।
বিধিতে শাস্তির বিষয়ে যা আছে
সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ৩১ নম্বর ধারার ১ উপ-ধারায় বলা আছে, ‘কোনো প্রার্থী বা তাহার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন-পূর্ব সময়ে এ বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ছয় মাস কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডণীয় হবেন।’
২ উপ-ধারায় বলা আছে, ‘কোনো রাজনৈতিক দল অথবা কোনো প্রার্থীর পক্ষে কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন-পূর্ব সময়ে এ বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডণীয় হবেন।’
৩২ নম্বর ধারার ১ উপ-ধারায় বলা হয়েছে, ‘এ বিধিমালার অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, যদি কোনো উৎস হতে প্রাপ্ত রেকর্ড কিংবা লিখিত রিপোর্ট হতে কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, মেয়র বা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী বা তার নির্বাচনী এজেন্ট এ বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করেছেন বা লঙ্ঘনের চেষ্টা করেছেন এবং অনুরূপ লঙ্ঘন বা লঙ্ঘনের চেষ্টার জন্য তিনি মেয়র, বা ক্ষেত্রমত, কাউন্সিলর নির্বাচিত হবার অযোগ্য হতে পারেন, তা হলে কমিশন বিষয়টি সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তদন্তের নির্দেশ প্রদান করতে পারবে।’
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।