বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মহাকাশ যুগে প্রবেশ করেছে। সেই যাত্রার ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো মহাকাশে বাংলাদেশি নভোচারী পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজধানীর গুলশান ক্লাবের রজনীগন্ধা মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২২ থেকে ৩৫ বছর বয়সী যেকোনো বাংলাদেশের নাগরিক মহাকাশে যেতে আবেদন করতে পারবেন। তবে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষার্থী হতে হবে। এমনকি পড়াশোনা শেষ করেছেন, এমন ব্যক্তিরাও আবেদন করতে পারবেন। পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক শক্তি যাচাই পরীক্ষায় তাঁকে যোগ্য হতে হবে।
মহাকাশে যেতে আগ্রহী ব্যক্তিরা ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আবেদন করতে পারবেন। নিবন্ধনের জন্য এই ওয়েব ঠিকানায় গিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের পর ৫০ জনকে বাছাই করা হবে। ২০২০ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠেয় ‘মিশন স্পেস ২০২২’-এ আমন্ত্রিত বিভিন্ন দেশের নভোচারীরা পরবর্তী বাছাই-প্রক্রিয়ায় থাকবেন। নির্বাচিত ১০ জনের তালিকায় প্রথমজনকে রাশিয়ায় ১৫ মাসের জন্য প্রশিক্ষণে পাঠানো হবে। সেই প্রশিক্ষণ শেষে তাঁকে মহাকাশের ইন্টারন্যাশনাল স্পেশ স্টেশনে (আইএসএস) ১০ দিনের জন্য পাঠানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিএসসিএলের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, মহাকাশে মানুষ পাঠানো একটি বিরাট পদক্ষেপ। পৃথিবীর খুব কম দেশই তা পেরেছে। বাংলাদেশ থেকে যদি কাউকে পাঠানো যায়, তাহলে দেশে মহাকাশবিজ্ঞান অনেক ধাপ এগিয়ে যাবে। তবে এর জন্য প্রচারণা দরকার। গোটা জাতিকে এই যাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন। তিনি বলেন, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে জাপান, চীন, কোরিয়া, ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, আফগানিস্তানসহ বেশ কিছু দেশ মহাকাশে নভোচারী পাঠিয়েছে। তাই বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে থাকবে? বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘মহাকাশ উৎসব-২০২০’-এর প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে মহাকাশে প্রথম বাংলাদেশি নভোচারী পাঠানো।
আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চতুর্থবারের মতো মহাকাশ উৎসব-২০২০। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই উৎসবের আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড। নতুন বছরের প্রথম দিনে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে সূর্য উৎসবের মাধ্যমে বছরব্যাপী মহাকাশ উৎসবের কার্যক্রম উদ্বোধন হবে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২০ সালে ১৫তম বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রো-অলিম্পিয়াড, আন্তর্জাতিক সেমিনার ও কর্মশালা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রকেট বানানো, আকাশ পর্যবেক্ষণসহ বছরব্যাপী থাকছে নানা আয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিসিএসসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মো. কামাল উদ্দিন, আলফ্রেড খোকন, সদস্য এম আবু তাহের প্রমুখ।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।