
প্রকাশ: ৪ নভেম্বর ২০১৯, ২২:৫

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা এবং কক্সবাজার জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির উদ্যোগে ইউএনডিপির সহায়তায় আয়োজিত ওয়ার্কশপ অন "কেস রেফারেল মেকানিজম বিষয়ক কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ইউএনডি এর সিটুআর প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাসুদ করিম। কক্সবাজার জেলার লিগ্যাল এইড অফিসার মৈত্রী ভট্টাচার্য, সহাকারি জজ এর সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবেদা সুলাতানা, উপ পরিচালক (যুগ্ম জেলা জজ), এনএলএসও। কর্মশালায় দৃশ্যমান উপস্থাপন করেন জনাব ইয়াসিন হাবিব সহকারী পরিচালক, (সিনিয়ন সহাকারি জজ), এনএলএসও।
সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় উখিয়ার ইনানী রয়েল টিউলিপ আবাসিক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন দেওয়ান জিন্নাহ, ডিস্ট্রিক ফেসিলেটেটর, ইউএনডিপি, মানিক বিশ্বাস, ন্যাশনাল কনসালটেন্ট, ইউএনডি; অয়াহিদ হোসেন এবং তনুশ্রী সাহা।কর্মশালায় উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলার ৩০ জন সাংবাদিকবৃন্দকে কেস রেফারেল মেকানিজম অধিকতর কার্যকারী করতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, এবং তাদের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এসময় বলা হয় শুধু জেলায় নয় উচ্চ আদালতেও বিনামুল্যে আইনী সহায়তা দিচ্ছে লিগ্যাল এইড।
বাংলাদেশের অনেক মানুষ অসহায় ও আর্থিকভাবে অসচ্ছল। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ‘আইনের আশ্রয়লাভের অধিকার’-কে প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু এই অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠির যে কোন ব্যক্তির যখন কোন আইনগত অধিকার ক্ষুণ্ন হয় তখন প্রতিকার পাওয়ার জন্য তাকে আইন-আদালতের আশ্রয় নিতে হয়। আমাদের দেশে আইন-আদালতের আশ্রয় নেয়া অনেক ব্যয়সাধ্য বিষয় হওয়ায় অনেকেই তাদের আইনগত প্রতিকার পায় না। ফলে লঙ্ঘিত হয় দরিদ্র মানুষের মৌলিক অধিকার।
এই প্রেক্ষাপটে সরকার ২০০০ সালে দরিদ্র মানুষের আইনের আশ্রয়লাভের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০ প্রণয়ন করে। এই আইনের মাধ্যমে সরকার আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রমকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়। জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের আইনিগত সেবার মাধ্যমে দরিদ্র, অসহায়, প্রান্তিক, আইন অনুযায়ী উপযুক্ত আবেদনকারীদের বিনামূল্যেআইনি পরামর্শ দেয়া হয়, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হয় এবং আদালতে দায়ের করা মামলায় আইনজীবী নিয়োগ করা সহ মামলার খরচ বহন করা হয়।

সরকারি আইনগত সহায়তা কার্যক্রমের সাথে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটির ভূমিকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই কমিটি যথাযথভাবে গঠন ও পরিচালনা হলে তৃণমূল থেকে আইন সহায়তার আবেদন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে প্রেরণের মাধ্যমে একটি কার্যকর রেফারেল পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।কক্সবাজার জেলায় লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে ইউএনডিপি এর সহায়তায় জেলা লিগ্যাল এইড কমিটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ফলশ্রুতিতে ২০১৯ সালের প্রথম ৫ মাসের তুলনায় গত ৫ মাসে বিনামূল্যে আইন সহায়তার আবেদন ১৮% বৃদ্ধি পায়। কক্সবাজার জেলা লিগ্যাল এইড অফিস থেকে ২০১৯ সালে ৬৭৭ জন বিনামূল্যে পরামর্শ, বিরোধ নিষ্পত্তি এবং আইনজীবী নিয়োগ সহ আইনগত সেবা প্রদান করা হয়। যা কক্সবাজার আদালতের মামলার আধিক্য কমাতে প্রকারান্তরে ভূমিকা রাখছে।
ইনিউজ ৭১/এম.আর