বৈধর চেয়ে অবৈধ সংযোগ বেশি; কমছে না অসাধুদের দৌরাত্ম

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৩১শে অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪১ অপরাহ্ন
বৈধর চেয়ে অবৈধ সংযোগ বেশি; কমছে না অসাধুদের দৌরাত্ম

আশুলিয়ায়  তিতাসের বৈধর চেয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগের পরিমান কয়েকগুণ বেশি। কমছেনা অসাধু গ্যাস ঠিকাদারদের দৌরাত্ম। অবৈধ গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে অসাধু ঠিকাদাররা  কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। 

অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহারকারী  ও অসাধু ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে  কঠোর ব্যবস্থা না থাকায়, নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে-না বলে মনে করছেন অনেকে। যারা অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করছেন এবং অবৈধভাবে যারা সংযোগ দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে এর প্রতিকার বা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব   হবে বলেও মনে করেন সাধুমহল। অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহারকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ সাধারণত নিম্নমানের পাইপ ও সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়।  একারণে প্রতিবছর এটার পরিবর্তন দরকার হয়। দিনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে যাওয়ার পর রাতে আবারও পুনরায় নতুন পাইপ দিয়ে সংযোগ দেওয়া হয়। আবার মাসিক বিল না থাকায় অবৈধ সংযোগ অনেক সাশ্রয়ী। সরকার আবাসিক গ্যাস সংযোগ না দেওয়ার কারণে অসাধু ঠিকাদারকে বছরে কিছু টাকা দিলেই আবার নতুন সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে।      ফলে সাধারণ গ্রাহকগণ অবৈধ সংযোগ ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। 

এ বিষয়ে সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, সাভার আশুলিয়ায় প্রায় ৫১ হাজার বৈধ সংযোগ রয়েছে, আর বাকী সব অবৈধ।  তবে অবৈধ সংযোগের সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই।     গ্যাস আমাদের  জাতীয় সম্পদ। আর এই সম্পদের অবৈধভাবে ব্যবহার করা এক প্রকার চুরি। তাই অবৈধ সংযোগের বিষয়ে গণ সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে যাতে করে তারা অবৈধ সংযোগ গ্রহণে অনিহা প্রকাশ করে। তরপরেও এটা নিয়ন্ত্রণে না আসলে রাষ্টীয় সম্পদ রক্ষার্থে আমরা আরো কঠোর পদক্ষেপ নিবো।  

তিনি আরো বলেন, তিতাসের অভিযান অব্যাহত আছে তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার বেলা ১২টার দিকে আশুলিয়ার কাঠগড়ার আমতলা এলাকায় দুই কিলোমিটার জুড়ে আবাসিক বাসা-বাড়ির অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসময় আবাসিক বাসা-বাড়ির প্রায় ১৫০০ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন  করা হয়। এ কাজে তিতাসের প্রায় ৮০জন শ্রমিক অংশ নেয়। উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন, সাভার তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের উপ-ব্যাবস্থাপক মোঃ মহিউদ্দীন আহম্মেদ, মোঃ আমিনুল ইসলাম, সহ-ব্যাবস্থাপক সাকিব বিন আব্দুল হান্নান এবং উপ-ব্যাবস্থাপক আব্দুল মান্নানসহ তিতাসের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। 

উল্লেখ্য,  তিতাসের বৈধ সংযোগ ব্যাবহারকারী অনেকেই অভিযোগ করে বলেন,  অবৈধ সংযোগ যখন দেওয়া হয় তখন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়না। দীর্ঘদিন পরপর অভিযান পরিচালিত হলেও তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় একটি অসাধু মহল অবৈধ সংযোগ দিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। গত ৩০/১০/১৯ ইং বুধবার কাঠগড়া আমতলা এলাকায়, ড্রেস কোয়ালিটি ওয়াশিং ডায়িং লি: নামক কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস কতৃপক্ষ,  কিন্তু রহস্যজনক কারনে কারখানা কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে   মামলা বা আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি।  এখানে এ পর্যন্ত কয়েকবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে এবং পূণরায় সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।  অথচ অসাধু মহলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরকার অবৈধ গ্যাস সংযোগ ঠিকাদার ও ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করলে, একদিকে কমবে অসাধুদের দৌরাত্ম আর অন্যদিকে বাড়বে বিপুল সরকারি রাজস্ব। 

 ইনিউজ৭১/জিয়া