
প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০১৯, ২২:৫৪

ইন্দুরকানীতে শিশুদের কারিগর হায়দার মাষ্টার। তার সারাদিনের কর্মের মূল ভাবনাই বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের শিশুদের নিয়ে। ইন্দুরকানী উপজেলার অজপাড়াগায়ের জড়াজীর্ণ বিদ্যালয়টিকে তিনি সাজিয়েছেন মনের মাধুরি মিশিয়ে। মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ থাকার জন্য উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠের স্থান দখল করে নিয়েছেন তার বিদ্যালয়টি। এই জীবন্ত কিংবদন্তি শিক্ষক হায়দার আলী মাস্টার যার ধ্যান জ্ঞান পুরোটাই বিদ্যালয় ও তার শিশু শিক্ষার্থাদের নিয়ে। পরিপাটি ভাবে সাজানো পরিস্কার পরিছন্ন স্কুলের খেলার মাঠটি দেখলেই বোঝাযায় কোথাও একটি পাতাও পড়ে থাকতে দেখবেন না।
সরকারী ভাবে বরাদ্ধকৃত টাকা,ও বিভিন্ন ব্যক্তির অনুদান ও নিজের অর্থ ব্যায়ে তিনি বিদ্যালয়টিকে সাজিয়েছেন এভাবে । ইন্দুরকানী উপজেলায় ৬৯ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বিদ্যালয় গুলোতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর শিক্ষা উপকরণ সহ বিদ্যালয় উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু এই অর্থ সঠিক ভাবে ব্যবহার করলে বিদ্যালয় গুলোকে শিশুদের শিক্ষার উপযোগী করে গড়ে তোলা যায় তার প্রমান দিলেন এই প্রধান শিক্ষক । তিনি এই অর্থ বিদ্যালয় ও শিশুদের জন্য ব্যয় করে শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিদ্যালয়টিকে উপযোগী করে তুলেছেন। উপজেলা সদর থেকে ৫ কিঃমিঃ দুরে কচাঁনদীর তীরবর্তী কালাইয়া গ্রামে ২২ নং মধ্য কালাইয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। টিনসেট সেমিপাকা বিদ্যালয়টিতে ১৩২ জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। শিশু শ্রেনীসহ সব শ্রেনী গুলো রয়েছে ইতিহাসের স্বাক্ষী হিসেবে সাজানো । বিভিন্ন কবি,সাহিত্যিক মুক্তি যোদ্ধাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে শ্রেনী কক্ষগুলো । জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার নামে করা হয়েছে মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য ভিত্তিক মুক্তি যোদ্ধা গ্যালারী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিুবুর রহমানের নামে করা হয়েছে বুক কর্নার । সেখানে নতুন প্রজন্মকে জানার জন্য রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক শিশুদের জন্য লেখা নানা লেখকের বই। এছাড়া জাতীয় চার নেতা, বীর শ্রেষ্ঠসহ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক ছবি ও চার্ট দেয়ালে প্রদর্শন করা হয়েছে। শিশুদের লেখা দেয়ালিকায় মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনকের অবদান ও তার কর্ম জীবন ফুটিয়ে তুলেছে। শিশুদের জন্য একটি ফুলের বাগান ও সাজানো খেলার মাঠ রয়েছে। সব মিলিয়ে একটি পরিপাটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা দেখলে প্রান জুরিয়ে যায়। বিদ্যালয়টির সামনে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ সহ রয়েছে নানা প্রজাতির বনজ গাছ। স্কুলের পিছনের কেয়ার রাস্তার দুইপাশে ও তিনি লাগিয়েছেন বিভিন্ন প্রজাতির ফল ও ফুলের গাছ।
বিদ্যালয়টি দেখতে প্রশাসনের কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষানুরাগীরা প্রায়ই এখানে আসে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হায়দার বেপারী জানান, একটি জড়া জীর্ণ বিদ্যালয়কে একজন শিক্ষকের যদি মন থাকে সরকার যে অর্থ প্রতি বছর বরাদ্দ দেয় সে অর্থ দিয়ে বিদ্যালয়কে শিশুদের উপযোগী করে সাজানো সম্ভব । উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প‚রবী রাণী দাস জানান, সরকারী বরাদ্ধের টাকায় এই বিদ্যালয়কে সাজানো হয়েছে। শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও এলাকা বাসীর সহযোগীতা থাকলে প্রত্যেকটা প্রাথমিক বিদ্যালয় এভাবে সাজিয়ে তোলা সম্ভব।

সম্প্রতি এ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ তিনি বলেন, এ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি শিশুদের শিক্ষার জন্য একটি আদর্শ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়টি দেখে অন্যদের ও তাদের নিজস্ব উদ্যোগে নিজ বিদ্যালয়কে সরকারের নিয়ম মেনে সুন্দর করার চেষ্টা করলে প্রাথমিক শিক্ষার আরো মানবৃদ্ধি পাবে।

ইনিউজ৭১/জিয়া