
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০১৯, ৩:৫

ক্যাসিনো সম্রাটের কাছে পদোন্নতি পেতে নিয়মিত ধরনা দিতেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আশ্রয়দাতাদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা যেমন রয়েছেন, আবার রয়েছেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে তাদের প্রোফাইল সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের নজরদারীর আওতায় আনা হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের গ্রিন সিগন্যাল পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে ক্যাসিনো ও টেন্ডারবাজি তদন্তের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা। রিমান্ডে ক্যাসিনোকান্ডে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও একই কমিটির বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি এনামুল হক আরমানের জিজ্ঞাসাবাদে এমন চাঞ্চল্যর পেয়েছেন তদন্তের সাথে জড়িত কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই সম্রাট, খালেদ মাহমুদ, জিকে শামীম ও আরমান চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো কারবার ও টেন্ডারবাজিসহ নানা রকমের অপরাধ চালিয়ে আসছিল। আর তাদের সহায়তা করেছেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা। পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তারাও তাদের সহায়তা করেছেন। বিনিময়ে তারা পেয়েছেন মোটা অংকের কমিশন। টেন্ডার বাণিজ্য করে তারা নানা কায়দায় টাকা কামিয়েছেন। খালেদ ও জিকে শামীমকে কয়েকদফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, টেন্ডার জমা দিলেই সব সেক্টরের লোকজনকে কমিশন দিতে হতো। কমিশন না দিলে কাজ পাওয়া বন্ধ করে দিত ওরা। যাদের বেশি কমিশন দেয়া হতো তার মধ্যে রেলপথ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর ও ক্রীড়া পরিষদের কতিপয় প্রকৌশলী ও কর্মকর্তা রয়েছেন। সম্রাট ও আরমান রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র্যাব। এরআগে ডিবি পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। র্যাবের হেফাজতে থাকা সম্রাট ও আরমানকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ক্যাসিনোকান্ডে গ্রেফতার হওয়া খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, সেলিম প্রধানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে তথ্য পেতে ২৪ সংস্থাকে চিঠি দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে এসব চিঠি দেয়া শুরু হয়েছে। ছয়জনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মানি লন্ডারিং আইনের আটটি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি।
যেসব সংস্থাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি লিমিটেড ও আবাসন খাতে ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব উল্লেখযোগ্য বলে জানা গেছে। যে ছয়জনের তথ্য চাওয়া হয়েছে তারা হলেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, যুবলীগের নেতা ও প্রভাবশালী ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীম, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক ও তার ছোট ভাই একই থানার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রূপন ভূঁইয়া, অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান ওরফে মিজান।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব