বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের মামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ ও নিখুঁত চার্জশিট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বুয়েটে আপনারা নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখেছেন। এটা কারো কাম্য নয়। যারা আবরারকে হত্যা করছে, ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা তাদের সনাক্ত করছি। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী যারাই এই ধরনের নারকীয়কাণ্ড ঘটাবে, কারো রাজনৈতিক পরিচয় না দেখেই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন তার সবগুলো সামনে নিয়ে আমরা কাজ করছি। মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে কথা বলে খুব শিগগিরই ভার্সিটি ও কলেজগুলোর ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালানো হবে। ছাত্রাবাস নিয়ে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাও কাজ করছে।’ বুয়েটের শেরেবাংলা হলের যে কক্ষে (২০১১) আবরারকে নির্যাতন করা হয়েছে সেই কক্ষটি ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহার। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। ওই শিক্ষার্থী পূজায় বাড়ি ছিল। তবে অমিত সাহা কোনও ফ্যাক্ট নয়। জড়িত যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। আবরারের বাবা যে মামলা করেছেন সে মামলায় নাম নেই তার বাইরেও কাউকে কাউকে পুলিশ আটক করেছে।
এদিকে, বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার মুখে আজ গ্রেফতার করা হয়েছে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা অমিত সাহাকে। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি, আমি শিওর না- অমিত সাহাকে ঠিক সেই মুহূর্তে পায়নি, সেই মুহূর্তে সে ছিল না। তার সাথে যোগাযোগ করলে সে বলেছিল সে পূজার ছুটিতে বাইরে গেছে। যাই হোক, যেভাবে হোক, তাকেও ধরা হয়েছে।’ ‘মামলায় আবরারের বাবা কিছু নাম দিয়েছিলেন, সেই নামের বাইরেও কিন্তু পুলিশ যাদের সম্পৃক্ততা পাচ্ছেন তাদেরকে ধরছেন। অমিত সাহা কিংবা যে কেউ হোক আমাদের কাছে ফ্যাক্টর নয়, আমাদের কাছে ফ্যাক্টর সে অপরাধী কিনা, সে অপরাধী হলেই আমরা ধরছি।’
প্রসঙ্গত, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জের ধরে আবরার ফাহাদকে রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হোতা অমিত সাহা ও আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমানকে আজ গ্রেফতর করা হয়। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।