জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সমসাময়িক ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কথা জানান। কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠা জাবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়টিকে সরকার কীভাবে দেখছে- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগ কী কারণে, নৈতিকস্খলন, সেটা যদি তদন্ত করে প্রমাণ হয়, তিনিও কোনো আইনের ঊর্ধ্বে নন। তিনি যদি কোনো অন্যায় করে থাকেন, এখানে যদি তার কোনো অপকর্মের সংশ্লিষ্টতা থাকে, তদন্তে যদি এটা প্রমাণিত হয়, তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) দায়িত্ব দেয়া হবে। এ জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পে ‘(জাবি) শাখা ছাত্রলীগকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছে’ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর এমন বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
কমিশন বাণিজ্যের অপরাধে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে পদত্যাগ করতে হয়েছে। একই অভিযোগে উঠেছে জাবির উপাচার্যের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। এদিকে ছাত্রলীগের পদ হারানো সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে জানা যায়, আলোচিত এক কোটি টাকা শাখা ছাত্রলীগকে ঈদ সালামি হিসেবে দিয়েছেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম।
সোমবার বিকেলে টাকা লেনদেন ও ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে জাবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ফাঁস হওয়া ফোনালাপে আলোচিত এক কোটি টাকা শাখা ছাত্রলীগকে ঈদ সালামি হিসেবে দিয়েছেন ভিসি ফারজানা ইসলাম। এটি অস্বীকার করার কিছুই নেই। সাদ্দাম হোসেন বলেন, ভিসির বাসায় মিটিংয়ে আমাদের সঙ্গে কথাবার্তা হয়, আমাদের ঈদ সালামি বাবদ টাকা দেবে। সেখানে আমাদের এক কোটি টাকা ঈদ সালামি দেয়ার কথা হয়। পরদিন শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল ও ছাত্রলীগ সম্পাদক চঞ্চলের কাছে এক কোটি টাকা পৌঁছে দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা (সাদ্দাম গ্রুপ) চঞ্চলের কাছ থেকে ভাগের টাকা বুঝি নিই। ভিসি কোথা থেকে এই টাকা আমাদের দিয়েছেন তা আমরা জানি না। এক কোটি টাকা ঈদ সালামি পেয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছি।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কমিশন কেলেঙ্কারির ঘটনায় জাবি উপাচার্য দায় এড়াতে পারেন না। একজন উপাচার্যের কাছে ছাত্রনেতারা কীভাবে কমিশন দাবির সাহস পায়, এ বিষয় নিয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গেই বা উপাচার্য কীভাবে বৈঠক করে। এটি নিয়ে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এ অপরাধে জন্য সবাই জাবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছেন।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।