পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে প্রয়োজনীয় উপকরন, ওষুধ ও চিকিৎসকসহ জনবল সংকটের কারনে ব্যাহত হচ্ছে গৃহপালিত প্রাণিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা। ফলে সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার প্রায় ৩২ হাজার পরিবারের হাঁস-মুরগি, গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়া, কবুতর-কোয়েল খামারসহ অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মির্জাগঞ্জ উপজেলায় তালিকাভুক্ত গরুর খামার রয়েছে ১২ টি । ব্যক্তিগতভাবে গড়ে উঠা একাধিক খামার তো রয়েছেই। এছাড়া ছাগলের খামার ২২টি, হাঁসের খামার ৭৫টি, মোরগের খামার(সোনালী) রয়েছে ২০টি , ব্রয়লার খামার ৫৫টি এবং গাভী মোটাতাজা করন খামার রয়েছে ২৫০টি। মির্জাগঞ্জ উপজেলায় মোট গরু রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার ৫৫৮টি, মহিষ ১ হাজার ৪৮০টি, ছাগল ৬ হাজার ২৭৮টি, ভেড়া অর্ধশত, হাঁস ২ লাখ ২০ হাজার ৯৫৯টি, মোরগ ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৭৪০টি, কবুতর ৮ হাজার ৯২৬ টিসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশু-পাখি রয়েছে আরো লক্ষাধিক।
সরকারি হিসেবে গৃহপালিত প্রাণীর সংখ্যা মোট ৮ লাখ ১২ হাজার হলেও এর চেয়ে অনেক বেশি প্রাণী রয়েছে এ উপজেলায়। আর এসব প্রানীদের দেখা শুনা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়ার জন্য উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসে রয়েছে ১১টি কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে ভেটেরিনারি সার্জনসহ ৬টি পদ রয়েছে শূন্য। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাসহ মাত্র ৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়েই চলছে অফিসের কার্যক্রম। ফলে সরকারের কাংখিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ৩২ হাজার পরিবারের ৮ লাখ ১২ হাজার প্রানী। এদিকে অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে নামে মাত্র প্রশিক্ষন নিয়ে কিছু হাতুড়ে ডাক্তাররা গ্রামে গ্রামে গিয়ে চিকিৎসার দেয়ায় নামে তাঁরা অপচিকিৎসা দিচ্ছে। ফলে অনেক পরিবারকে হারাতে হচ্ছে মূল্যবান গৃহপালিত প্রাণি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন করে পশু চিকিৎসক ও পরামর্শক নিয়োগের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসবে সরকার এমনটাই মনে করেছেন এ এলাকার খামারীরা।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের একাধিক খামারি জানান, তারা কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নত জাতের গরু উৎপাদন করতে আগ্রহী। কিন্তু এখানে কোনো ভেটেরিনারি সার্জন না থাকায় এ সেবা ও লক্ষ্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। রামপুর ও মজিদবাড়িয়া ইউনিয়নের খামারিরা বলেন, এ ইউনিয়ন থেকে উপজেলা সদরে যাতায়াত ব্যবস্থা কঠিন। ফলে পশু-পাখি নিয়ে হাসপাতালে আসা-যাওয়া কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। সদরে এসে ডাক্তার নিয়ে যাওয়া সময় সাপেক্ষ ব্যাপার এবং বেশী অর্থ খরচ হয়ে যায়। অনেক সময় দেখা যায় ডাক্তার নিয়ে বাড়ি পৌঁছার আগেই পশু মারা যায়। উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মাওলা জানান, এখানে অধিকাংশ পদ শূন্য থাকায় মির্জাগঞ্জের বিপুল জনগোষ্ঠীর প্রাণিকে চিকিৎসা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় ওষুধ বরাদ্দ কম ও আধুনিক যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে এখানে। বছরে একবার মাত্র এখানে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। তা দিয়ে বছর পার করতে হয় আমাদের। ফিল্ড অফিসার না থাকায় ৬টি ইউনিয়নের বিশাল এলাকায় গিয়ে তাদের পশুর চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।