রাজধানীর গাবতলীতে আন্তঃনগর বাস টার্মিনালে বেশি ভাড়া নিচ্ছে জিআর পরিবহন নামের ঝিনাইদহগামী একটি পরিবহন কোম্পানি। অভিযোগকারী আছেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও আছেন; আছে পরিবহন কর্তাদের সরল স্বীকারোক্তি। তবুও কোনো ব্যবস্থা নিলেন না বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান।
শুক্রবার (৩১ মে) গাবতলীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিদর্শনে যান সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুর রহিম সুজনের নেতৃত্বে টার্মিনালে নিজেদের কার্যক্রম শুরু করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় মোহাম্মদ সাদিক নামের এক যাত্রী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযোগ জানান যে, জিআর পরিবহনে সবসময় সাধারণ ভাড়া ৮০০ টাকার পরিবর্তে ১৩০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেট কাউন্টারে গিয়ে জানতে পারলেন এটা এসি বাসের ভাড়া। যাত্রীর টিকিট, অভিযোগকারী যাত্রী এবং কাউন্টারের ম্যানেজার মোহাম্মদ নাজিমকে নিয়ে গেলেন বিআরটিএ বুথে বসে থাকা বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমানের কাছে। ‘এসি বাস’ শুনেই চেয়ারম্যান বলে দিলেন, ‘কিছু করার নেই’।
সরকারি সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হয়েও যাত্রীর স্বার্থের বদলে মালিকপক্ষের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এর কারণ জানতে চান উপস্থিত সাংবাদিকেরা। এসময় বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, এসি বাসের ভাড়ার তালিকা বিআরটিএ নির্ধারণ করে না। এগুলো বাস মালিকরাই নির্ধারণ করে। বাস মালিকেরই নির্ধারিত ভাড়া ছিল ৮০০ টাকা। সেখান থেকে বাড়িয়ে ১৩০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এমন স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে জানতে চাইলে মশিয়ার রহমান বলেন, প্লেনে দেখেন না? একেক সময় একেক রকম ভাড়া থাকে। এগুলো এসি বাস। একেক বাসের একেক রকম সুবিধা। তাই ভাড়াও একেক রকম। তাহলে প্লেন ও বাংলাদেশের এসি বাস এক? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, হ্যাঁ, এক।
তবে এর খানিক বাদে এসি বাসের জন্য আলাদা ভাড়া নির্ধারণে কাজ করবেন বলে জানান মশিয়ার রহমান। তাহলে প্রায় ২০ বছর আগে থেকে বাংলাদেশে শুরু হওয়া এসি বাসের বিষয়ে এতদিন কেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ২০ বছরে এসি বাস নিয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। আমরা কোনো কমপ্লেইন পাইনি। এসময় বিআরটিএ চেয়ারম্যানের বক্তব্যকে সমর্থন করে এসি বাস মালিকদের এমন বাড়তি ভাড়া আদায়কে সমর্থন দিয়ে বক্তব্য দেন বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাবু রমেশ চন্দ্র ঘোষ। তিনি বলেন, একটা গাড়ি যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ঈদের সময় ঢাকায় খালি ফেরত আসে। তাই ভাড়া বেশি নিতেই হয়। তবে আরও অন্যান্য রুটের এসি বাসে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না। তাহলে জিআর পরিবহন কেন নিচ্ছে? এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি বাস মালিক এই নেতা।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।