শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাব্বির আহমেদের বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন উপজেলাবাসী। শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে উপজেলা সদরের শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে এই মানববন্ধন করেন তারা। ভেদরগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা, মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ীসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাব্বির আহমেদ ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর ভেদরগঞ্জে ইউএনও হিসেবে যোগ দেন। গত ১৪ মে তাকে ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলায় বদলির আদেশ জারি হয়। এরপর সাব্বির আহমেদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ তথ্য জানান। তখন থেকেই ভেদরগঞ্জের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ফেসবুকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখান। বদলির আদেশ বাতিল করে তাকে ভেদরগঞ্জেই রাখার দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি তোফাজ্জল মোড়ল বলেন, সাব্বির আহমেদ যোগদানের পর ভেদরগঞ্জে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। তিনি দুর্নীতি, মাদকের বিস্তার, বাল্যবিবাহ রোধসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সাধারণ মানুষ তাকে অনেক ভালোবাসেন। আমাদের দাবি আরও কিছু দিন তাকে ভেদরগঞ্জের উন্নয়নের জন্য রাখা হোক। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মান্নান রাড়ি বলেন, সাব্বির আহমেদ গত দেড় বছরে ভেদরগঞ্জের যে পরিবর্তন দেখিয়েছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। অন্যায়-অনিয়ম দূর করতে ও উন্নয়নে নিবেদিতভাবে কাজ করেছেন। তাই এলাকার মানুষের কাছে তিনি অনেক জনপ্রিয়। তার বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমরাও রাস্তায় নেমেছি।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুজ্জামান খান বলেন, সাব্বির আহমেদ ভেদরগঞ্জে যোগদানের পর ফেসবুকে একটি পেজ খোলেন। ওই পেজে মানুষ তাদের নানা সমস্যার তথ্য দিতেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে তিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক সড়ক, সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে বাল্যবিবাহ রোধ ও মাদক নিয়ন্ত্রণে। এ পর্যন্ত তিনি শতাধিক বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছেন। ওই কিশোরীদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তার এসব ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আমরা চাই আরও কিছু দিন তাকে ভেদরগঞ্জে রাখা হোক।
ইউএনও সাব্বির আহমেদ বলেন, সরকারি চাকুরিতে বদলি একটি রুটিন কাজ। ভেদরগঞ্জে কাজ করার সময় মানুষের অনেক সহযোগিতা ও ভালোবাসা পেয়েছি। ভালোবাসার অধিকার থেকেই হয়ত তারা পুনরায় তাদের এলাকায় রাখতে চায়। বদলির আদেশ হাতে পেয়েছি। খুব শিগগিরই নতুন কর্মস্থলে চলে যাব। জানা যায়, ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা হিসেবে যোগ দেয়ার পর তার বিভিন্ন জনবান্ধব উদ্যোগে বদলে যায় দুর্গম ভেদরগঞ্জের চিত্র। প্রায় দেড় বছরে তিনি প্রশাসক নয়, নিজেকে ভেদরগঞ্জবাসীর একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। প্রশাসনিক কাজে কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ভেদরগঞ্জবাসীর যে কোনো দুর্যোগে বিলিয়ে দিয়েছেন নিজেকে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।