মানারাতের ডাক্তার হবার স্বপ্ন পূরনে বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
এফ এম নাজমুল রিপন
প্রকাশিত: শনিবার ১১ই মে ২০১৯ ০১:৪৭ অপরাহ্ন
মানারাতের ডাক্তার হবার স্বপ্ন পূরনে বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতা

ট্রেনে দু’টুকরো হয়ে নিহত আজাহারের বিধবা স্ত্রী আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় এক মেয়ে ও দুই ছেলে নিয়ে কোনভাবে বেঁচে আছেন। তার ছেলেমেয়ের মধ্যে মেয়ের মধ্যে বড় মানারাত খাতুন ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভালো। তাকে কোন সময় পড়াশুনার কথা বলতে হতো না। নিজের পড়াশুনা করে আবার দুই ভাইকেও পড়াশুনা করাতো। মানারাত এ বছর বরিশালের আগৈলঝাড়ার সেরাল বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। মানারাতের ইচ্ছে চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু এখন কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। তারপরও বিভিন্ন স্বজনদের সহযোগিতায় ভর্তি করা হলেও সেখানে যে খরচ হবে তা কিভাবে মেটাবো। কথাগুলো বলছিলেন মানারাতে বিধবা মা রোকসানা বেগম। আর মেয়ের ভালো লেখাপড়ার জন্য আফসোস করছিলেন। তিনি আরো বলেন, ভালো ফলাফল না করলেই ভালো হতো। তাহলে আর তার এত দুশ্চিন্তা করতে হতো না। 

মানারাত বলেন, ঢাকায় একটি প্রাইভেট প্যাথলজিক্যাল ল্যাবে কর্মরত তার বাবা আজাহার বেপারী বাসায় ফেরার পথে ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ট্রেনে দু’টুকরো হয়ে নিহত হন। পিতার মৃত্যুর পর তারা উপজেলার সেরাল গ্রামে চার পরিবার কোনভাবে একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছে। তাদের সহায়তার একমাত্র অবলম্বন নিকট আত্মীয়স্বজন। তার চার মামা তাদের বেশী সহযোগিতা করে আসছে। তাদের আর্থিক সহায়তায় চলছে তাদের সংসার। এর মধ্যে এক মামা বোরহানউদ্দিন মারা গেলে সহায়তার একটি হাত কমে যায়। এছাড়া সে (মানারাত) প্রাইভেট পড়িয়ে যা পায় তাও সংসারে দেয়। 

তার দুই ভাইর মধ্যে জুবায়ের হোসেন সেরাল বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত এবং জুনায়েদ হোসেন কালকিনি মাদ্রাসায় হাফেজী পড়ছে। জুবায়েরকে লেখাপড়ায় সে সহযোগিতা করে। মানারাত আরো বলেন, স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতায় সে এত ভালো ফলাফল করতে পেরেছে। কারন প্রাইভেট পড়ার আর্থিক দৈন্যতার জন্য আমার কলেজে ভর্তি হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে লেখাপড়ার সুযোগ পেলে চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে বলে জানান মানারাত।  সেরাল বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহামুদ হাসান লিটন বলেন, দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ করে কোন রকম প্রাইভেট ছাড়াই বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে মানারাত। তার এখন কলেজে ভর্তি হওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এ জন্য তিনি বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন। বিত্তবানদের সহযোগিতাই পারে মানারাতের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে। 

ইনিউজ ৭১/এম.আর