দুই বছর আগে মোবাইলের একটি ইমো কলের মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বেতাগী ইউনিয়নের মধ্য বেতাগী ৩নম্বর ওয়ার্ডের এক গৃহবধুর পরিচয় ঘটে ঢাকার এক সাংবাদিকের সাথে। সে সাংবাদিক আবার অনেক গুণে গুণান্বিত। তিনি একাধারে সাংবাদিক, ব্যান্ড সংগীত শিল্পী, মানবাধিকার সংগঠক, কলাম লেখক আরো কত কী! তার এসব গুণে মুগ্ধ হয়ে গৃহবধু তার প্রেমে পড়ে যান। স্বপ্ন দেখেন তার সাথে ঘর বাঁধার। এমন কি স্বামী, সন্তান ফেলে ওই সাংবাদিকের সাথে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেন। এদিকে স্বামী, সন্তান আর সংসারের প্রতি স্ত্রীর উদাসিনতা দেখে স্বামীর সন্দেহ জাগে। তিনি স্ত্রীর পরকিয়ার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে একটু কঠোর হয়ে মোবাইল ফোনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এতে স্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে এক্ষুণি তাকে এই নরক থেকে নিয়ে যেতে কৌশলে খবর পাঠান ঢাকার সাংবাদিকের কাছে।
শুক্রবার (৩ মে) সকালে ঢাকার সাংবাদিক প্রেমিকাকে নিয়ে যেতে রাঙ্গুনিয়ায় আসেন। স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে দুপুরে বাড়ির বাইরে পা রাখেন সাংবাদিকের হাত ধরে পালিয়ে যেতে। বাঁধ সাধে বেরসিক এলাকাবাসী। তারা সন্দেহজনক অবস্থায় দু’জনকে আটকে ফেলে। তাদের গ্রামের গৃহবধুকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ায় তারা সাংবাদিককে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। সাংবাদিক নামধারী ওই প্রতারকের নাম বি এম আশিক হাসান। পুলিশ তার কাছ থেকে যে ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করে তাতে লেখা আছে তিনি ‘কালের খবর’ নামক একটি পত্রিকার হেড অব মার্কেটিং। এছাড়া আরো ১৩টি পদে তিনি দায়িত্বশীল আছেন বলে ওই কার্ডে উল্লেখ রয়েছে। কার্ডে ঠিকানা লেখা আছে বাড়ি- ৫, রোড- ২, সেক্টর- ১৩, উত্তরা, ঢাকা- ১২৩০। তবে সে খুলনার দিঘলীয়া থানার সেনহাটি মিয়া পাড়া গ্রামের বিএম আবদুর রশিদের পুত্র। এই বিষয়ে তার বিরুদ্ধে রাঙ্গুনিয়া থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন প্রতারনার স্বীকার ওই গৃহবধূ। তাকে শনিবার (৪ মে) সকালে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ আহসানুল কাদের মোঃ ইমতিয়াজ ভূইয়া জানান, সাংবাদিক বি এম আশিক হাসানের সাথে মোবাইলে পরিচয় হওয়ার পর তিনি গৃহবধুকে ঢাকায় অভিজাত জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখালে গৃহবধু গ্রামের মধ্যবিত্ত সংসারের টানাপোড়ন থেকে মুক্তি পেতে তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। তারই সুযোগে সাংবাদিক আশিক গৃহবধুকে ফুঁসলিয়ে ভাগিয়ে নিতে রাঙ্গুনিয়ায় আসেন এবং শুক্রবার দুপুরে গৃহবধুকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসীর কাছে ধরা পড়েন। পরে এলাকাবাসী গৃহবধুসহ ওই সাংবাদিককে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। বর্তমানে ওই সাংবাদিক পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। পরে গৃহবধুর স্বামী ও চাচা থানায় আসেন এবং ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ওই সাংবাদিকের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তার দেশের বাড়ি খুলনায় কিংবা ঢাকায় তার পরিবার-পরিজন কিংবা স্ত্রী-সন্তান আছে কিনা, তার বিরুদ্ধে কোথাও কোন অপরাধেরমূলক কর্মকান্ডের মামলা আছে কিনা এসব বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।