ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় সন্ধ্যা থেকে সারারাত থাকবে পুরো দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ৩রা মে ২০১৯ ১১:১৬ পূর্বাহ্ন
ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় সন্ধ্যা থেকে সারারাত থাকবে পুরো দেশ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ‘অতি প্রবল’ ঘূর্ণিঝড় ফণীর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হয়েছে ভারতে। দেশটির উড়িষ্যার পূর্ব উপকূল অঞ্চলে শুরু হয়েছে হালকা বর্ষণ। এছাড়া বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৫২ কিলোমিটার।৪৩ বছরের ইতিহাসে ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। আঘাত হানার সময় সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসসহ ১০০-১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ। এরপর সারারাত পুরো বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে।আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ পুরো বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে, এই সময়টা ক্রিটিক্যাল। তিনি বলেন, উচ্চগতির বাতাস ও দমকা হাওয়ার সময় সবাইকে নিরাপদে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফনি উপকূল অতিক্রম করার সময় বাংলাদেশের উপকূলীয় নিচু এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।এদিকে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ফণী বৃহস্পতিবার রাত তিনটায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত ও উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার বিকাল নাগাদ ভারতের ওডিশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। পরবর্তীতে ওডিশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে ‘ফণী।’

দেশের উপকূলীয় জেলা ও দ্বীপগুলোর ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ও অমাবশ্যার প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।ঘূর্ণিঝড় ফণীর কবল থেকে দেশবাসী যেন রক্ষা পায় সে জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার মসজিদে মসজিদে এই দোয়ার আহ্বান জানান তিনি।