
প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৪৬

স্বরূপকাঠিতে গ্রীষ্মের তাপদাহে জন জীবনে ত্রাহি অবস্থায় বেড়েই চলছে ডায়রিয়ার প্রার্দুভাব। প্রতিদিনই হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীদের সংখ্যা। বেডে জায়গা না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দা ও মেঝেতে বসে রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। চলতি মাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ৪০০ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বেশির ভাগই রয়েছে নারী ও শিশুর সংখ্যা। হাসপাতালের ডাক্তাররা মনে করছেন মাছ ও মুরগীর পোল্ট্রি ফিডের কারনে মানবদেহে ডায়রিয়াটা বেশি ছড়িয়ে পড়ছে। হাসপাতালে এভাবে ডায়রিয়া রোগীদের চাপ অব্যহত থাকলে শ্রীগই পৃথক মেডিকেল টিম গঠন করে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক।

নেছারাবাদ হাসপাতালের আন্তঃবিভাগের নাসির্ং ইনচার্জ নার্স পলাশি খরাতি জানান, চলতি মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৩৭৫ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। ১৫ দিনে ভর্তির সংখ্যা ১৬৬, সাত দিনে ১৪০, তিন দিনে ৬০ এবং গত একদিনে ডায়রিয়া আক্রান্ত ২০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ভর্তিকৃত ওই ডায়রিয়া রোগীদের মধ্যে নারী ও শিশুদের সংখ্যাই বেশি। ইনচার্জ পলাশি আরো জানান, ভর্তিকৃত ডায়রিয়া রোগীদের ভিতর থেকে কলেরা ও খাবার স্যালাইন সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সব কিছু দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলার বিন্না গ্রাম থেকে আসা ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়া দুই বছরের মেয়ে শিশুর মা রহিমা বেগম বলেন তার মেয়ে তানিয়ার(২) ডায়রিয়া নিয়ে রোববার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছন। চিকিৎসার জন্য এখান থেকে কলেরা স্যালাইন ও খাবার স্যালানই দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বাকি ওষুধপত্র বাহির থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। ৬ মাসের শিশু নিয়ে গত তিন দিন আগে ভর্তি হওয়া রোগীর মা হালিমা বেগম বলেন, এখান থেকে কলেরা স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। বাকি সব বাহির থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। তার মেয়ে শিশুর ডায়রিয়ার বয়স তিন দিন হয়েছে। কিছুতেই কমছেনা। আন্তঃবিভাগের নাসির্ং ইনচার্জ নার্স পলাশি খরাতি বলেন, রোগীদের চাপ বারায় চিকিৎসা দিতে তাদের কিছুটা হিম শিম খেতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ১৯ বেডের এ হাসপাতালে ১২০ থেকে ১৫০ রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা চিকিৎসা নিচ্ছেন।


তবে আমাদের পর্যাপ্ত নার্স ও কলেরা স্যালাইন ও খাবার স্যালাইন রয়েছে। হাসপাতাল থেকে ভর্তি রোগীদের এসব দেওয়া হচ্ছে। তবে রোগীদের এ চাপ অব্যাহত থাকলে আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে স্যালাইন শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।নেছারাবাদ হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার আসাদুজ্জামান বলেন, যেহেতু ডায়রিয়া একটি পানিবাহিত রোগ। গনহারে নদী ধারে ও পুকুরের মধ্যে স্থাপিত পোল্ট্রির ময়লা পানিতে ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষ থালাবাসন সহ যাবতীয় কাজে সে পানি ব্যবহার করায় দ্রুত ডাইরিয়া বেড়েই চলছে বলে তিনি মনে করছেন।

হাসপাতালের কয়েকজন ষ্টাফ নার্স বলেন গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষেরা অজ্ঞতার কারনে এ সময়ে বেশি ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত ২৫০ জন স্বাস্থ্য সহকারি রয়েছেন। তারা যদি গ্রামের ওই সমস্ত এলাকায় গিয়ে ডায়রিয়া প্রতিরোধে সচেতনতার জন্য বাড়ী বাড়ী গিয়ে একটু ক্যাম্পেইন করেন তাহলেও ডায়রিয়া অনেকটা প্রতিরোধ সম্ভব বলে তারা মনে করেন। আবাসিক ডাক্তার আসাদুজ্জামান বলেন তাদের স্বাস্থ্য সহকারিদের বলে শ্রীঘই ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য গ্রামের মানুষের মধ্যে এ ধরনের সচেতনতা তৈরী করা হবে। নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ তানভীর আহম্মেদ সিকদার বলেন ডাইরিয়া রোগীদের চাপ বাড়ছে। আবার চিকিৎসা নিয়ে বাড়ীও যাচ্ছেন। ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে তারা চেষ্টার কোন ত্রুতি করছেননা বলে জানান।
ইনিউজ ৭১/এম.আর