নিরাপদ সড়কের আন্দোলন চলার সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। আহত দুই শিক্ষার্থীর একজনকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ও পরে অ্যাপোলো হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুর প্রতিবাদে বুধবার সকাল নয়টা থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন। এসময় তারা প্রগতি সরণির ঘটনায় জড়িত বাস চালকের শাস্তি, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে স্প্রিড ব্রেকার নির্মাণসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের ডাবল ট্রিপ চালু, প্রধান ফটকের সামনে ফুটওভার ব্রিজ ও স্প্রিড ব্রেকার নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটক থেকে লেগুনা স্ট্যান্ডের দাবি জানান। দুপুর একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শেষ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কর্মসূচি শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে পাশের টিএসসিতে যেতে থাকেন। এসময় প্রধান ফটকের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেনের গাড়ি দুই শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দেয়। ওই শিক্ষার্থীরা হলেন- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইমা আক্তার (১০ম ব্যাচ) এবং আয়শা মোমেনা (১৪তম ব্যাচ)। গাড়ির ধাক্কায় ইমা দূরে ছিটকে পড়েন। কিন্তু আয়েশা গাড়ির ধাক্কায় গাড়ির সামনে পরলেও আবার তার পায়ের ওপর দিয়ে গাড়ির চাকা তুলে দেওয়া হয়। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ওই শিক্ষক নিজে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য শিক্ষার্থীরা গাড়িটি আটক করে আহত আয়শাকে হাসপাতালে নেওয়ার অনুরোধ করেন।
এসময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গাড়িটি ভাঙচুর করেন। পরে গাড়ি ভাঙচুর থামালে শিক্ষক গাড়িটি নিয়ে চলে যান। আর আয়েশাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহত শিক্ষার্থী ইমা আক্তার জানান, আমরা দুইজন ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় একটি প্রাইভেটকার আমাদের ধাক্কা দেয়। আমি দূরে ছিটকে পরলেও আয়েশার ওপর দিয়ে গাড়ি উঠিয়ে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, আহত শিক্ষার্থী আয়েশাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আয়েশার চিকিৎসার দায়িত্ব শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন নিজে নিয়েছেন। শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ব্রেক কাজ না করার জন্য দুর্ঘটনাটা ঘটে। আমি আহত শিক্ষার্থীর সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি। আর আমি তাকে গাড়িতে নিতে চাই, কিন্তু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে কিছু শিক্ষার্থী আমার গাড়িতে হামলা চালায়।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।