ইন্দুরকানীতে ৬টি ভাটার ৩৩ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: রবিবার ৩রা মার্চ ২০১৯ ০৩:৩০ অপরাহ্ন
ইন্দুরকানীতে ৬টি ভাটার ৩৩ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে ৪ দিনের টানা বর্ষণে ৬টি ইট ভাটার প্রায় ৩৩ লাখ ইট বৃস্টির পানিতে নস্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে ইট ভাটার মালিকরা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ইট ভাটার মালিকরা। এত ক্ষয়ক্ষতি কিভাবে কাটিয়ে উঠবেন এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ভুগছেন তারা। এসব ইট ভাটার মালিকদের মধ্যে কারো কারো ব্যাংক থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আবার কারো কোটি টাকারও উপরে ঋণ নেয়া আছে। এরপর রয়েছে মৌসুমের শুরুতে লাখ লাখ টাকা শ্রমীকদের দাদন দেয়া। এ ক্ষয়ক্ষতির কারনে এ বছর তাদের লাভের মুখ দেখাতো দুরের কথা কমবেশি লোকসান গুনতে হবে প্রতিটি ইট ভাটার মালিককে এমনটিই জানালেন ভাটার মালিকরা।

শনিবার ক্ষতিগ্রস্থ ভাটা গুলো ঘুরে জানা যায়, বঙ্গোবসাগরে সৃষ্ট নি¤œচাপের কারণে গত সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা বর্ষণ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪ দিনের অবিরাম বর্ষণে উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের কচা নদীর তীরবর্তী শাহানাজ ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজ (এসবিআই), নিয়াজ ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজ (এনবিআই), আলামিন ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজের (এবিআই), আরওয়ান ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজ (এএমবিআই), হাওলাদার ব্রিকস ইন্ডাস্ট্রিজ (এইচবিআই) ও কলারন এলাকার পানগুছি নদী তীরবর্তী পানগুছি ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজ (পিবিআই) এ ৬টি ইট ভাটার প্রায় ১ কোটি ৬৬ লাখ টাকার কাঁচা ইট বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এর মধ্যে শাহানাজ ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজের নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রায় ১২ লাখ কাঁচা ইটের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ৬০ লাখ টাকা, পানগুছি ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজের ৬ লাখ ইটের ক্ষতির মূল্য ৩০ লাখ টাকা, আলামিন ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজের ৭ লাখ ইটের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ৩৫ লাখ টাকা,  নিয়াজ ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজের ৪ লাখ ইটের ক্ষতির মূল্য ২০ লাখ টাকা, আরওয়ান ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজের ৩ লাখ ৫০ হাজার ইটের ক্ষতির মূল্য ১৭ লাখ টাকা, এবং হাওলাদার ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজের ৮০ হাজার ইট নস্ট হয়ে ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

ইট পোড়ানোর এ মৌসুমে ইট ভাটা গুলো লাখ লাখ নতুন ইট তৈরি করে শুকাচ্ছিল। এমন অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারনে উপকূলীয় এ এলাকাটিতে গত সোমবার থেকে টানা বর্ষণ শুরু হয়। আর এতে বৃস্টিতে ক্ষতির কবলে পড়ে স্থানীয় ইট ভাটা গুলো। ভাটা গুলোতে কাঁচা ইটের সারিবদ্ধ পট টানা বৃস্টির কারণে ভেঙ্গে পড়েছে। আবার ধুয়ে কাচা ইট মাটির সাথে একেবারে মিশে গেছে। প্রতিটি ইট ভাটার প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ইট নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু ইট ভাল থাকলেও তা পোড়ালে পিক ছাড়া অন্য কোন কাজে আসবেনা। এদিকে নষ্ট হয়ে যাওয়া এসব ইট গুলো সরাতে তাদের আর্থিক ক্ষতি সহ অনেক দিন সময় লাগবে বলে জানান ক্ষতিগ্রস্থ মালিকরা। শাহানাজ ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী মোঃ রমিজ উদ্দিন হাওলাদার জানান, পোড়ানের আগ পর্যন্ত এক একটি ইটের পিছনে খরচ পড়ে ৫ টাকা করে। ৪ দিনের বৃস্টিতে স্থানীয় ভাটা গুলোর মধ্যে আমার ক্ষতি বেশি হয়েছে। আমার ভাটার ১২ লাখ কাঁচা ইট নস্ট হয়ে গেছে। যার মূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা। পানগুছি ব্রিকস ইন্ডাষ্ট্রিজের ম্যানেজার মোঃ হাচান জানান, আমাদের ভাটার ৩০ লক্ষাধিক টাকার ৬ লাখ কাঁচা ইট বৃষ্টির পানিতে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর